কলকাতার বাজারে পেঁয়াজ (Price Hike) এবং আলুর দাম নিয়ে এক বিশাল সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রেতারা যে আকাশছোঁয়া দামে পণ্য কিনছেন, তা তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ করে দিয়েছে। একদিকে যেমন বাজারে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, তেমনই দামবৃদ্ধির কারণে শাকসবজি (Price Hike) এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারের এই অবস্থায় ক্রেতাদের মুখে একটাই প্রশ্ন, ‘‘খাব কী?’’
সাধারণ মানুষের অসন্তোষের মধ্যে, মঙ্গলবার কলকাতার বিভিন্ন বাজারে হানা দেয় টাস্ক ফোর্স। বাজারে দামের ওঠানামার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করলেও, শেষ পর্যন্ত কোনও ধরপাকড়ের পথে হাঁটেনি। বরং তারা নিজেদের কাজটি ‘সন্তুষ্ট’ অবস্থায় শেষ করেছে, তবে তাদের বক্তব্যে আভাস দেওয়া হয়েছে যে, শীঘ্রই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
কলকাতার বিভিন্ন বাজারে গত কয়েকদিনে পেঁয়াজ এবং আলুর দাম (Price Hike) ঊর্ধ্বমুখী। শুধু পেঁয়াজ নয়, অন্যান্য সবজির দামও রীতিমতো আকাশছোঁয়া। এখন পেঁয়াজের দাম প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি(Price Hike), এবং আলুর দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। বিশেষ করে, কোলে মার্কেটের মতো পাইকারি বাজারে দাম তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হলেও, সেখানে দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকার (Price Hike)মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে, অন্যান্য বাজারে দাম(Price Hike) আরও বেশি। একদিকে যেমন ক্রেতারা বাজারে গিয়ে হতাশ হচ্ছেন, তেমনই ব্যবসায়ীদেরাও নিজেদের বিক্রয় মুল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
একাধিক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমরা পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে প্রতিদিনই চরম সংকটে পড়ছি। এত দাম বাড়ল কীভাবে? মিষ্টি আলু, শসা, এবং অন্যান্য সবজি তো আছেই, কিন্তু পেঁয়াজ তো মিশন ছাড়া খাবার সম্ভব নয়।’’ এর ফলে, একদিকে যেমন দরিদ্র মানুষের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও চিন্তিত যে, খাবারের খরচ আরও বাড়বে কি না।
টাস্ক ফোর্সের হানা এবং বাজারের ওপর নজরদারি সত্ত্বেও দামের ফারাক স্পষ্ট দেখা গেছে। কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে, যেখানে পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে অন্যান্য বাজারে দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে, মানিকতলা বাজারে পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা কেজি পর্যন্ত চলে গেছে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, “দামের এই পার্থক্য একদিনে হয়নি। কারণ, কোলে মার্কেটে পেঁয়াজ ঢুকেছে ১৬০০ টাকা প্রতি বস্তা, কিন্তু মানিকতলায় তা বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ টাকা প্রতি বস্তা দরে। এই ব্যবধানের কারণে দাম বাড়ছে।”
রবীন্দ্রনাথ কোল, যিনি টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি জানান, ‘‘এটা সত্য যে, পাইকারি বাজারে এবং খুচরো বাজারে দামবৃদ্ধির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আশা করছি, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’’
টাস্ক ফোর্স যখন বাজারে হানা দেয়, তখন তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে। তবে, তারা কোনও ব্যবসায়ীকে আটক বা জরিমানা করার পথে হাঁটেনি। তাদের বক্তব্য ছিল, ‘‘আমরা আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট যে, কিছুদিনের মধ্যে দামের পার্থক্য দূর হয়ে যাবে এবং দাম কমবে।’’
তবে, সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে, ‘‘যদি দাম বাড়তেই থাকে, তাহলে কেন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না? ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেই যদি সব কিছু ঠিক করা হয়, তবে কেন এভাবে বাজারের দামে খেলা হতে দেওয়া হচ্ছে?’’ এই ধরনের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিশেষ করে যখন ক্রেতারা বাজারে গিয়ে দাম বৃদ্ধির কারণে সমস্যায় পড়ছেন।
টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা আশ্বাস দিয়েছেন যে, বাজারে পেঁয়াজের দাম শীঘ্রই কমবে এবং সব বাজারে কম দামে পেঁয়াজ আসবে। তবে, প্রশ্ন হচ্ছে, কি পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ আসবে এবং দাম কতটা কমবে? কারণ, বাজারের অস্থিরতা এখনও কাটেনি। পরিস্থিতি যদি না বদলায়, তাহলে সাধারণ মানুষ আরও বড় সংকটে পড়তে পারে।
এছাড়া, ক্রেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং অসন্তোষ আরও বাড়ছে। এর ফলে, কেবল কলকাতার বাজার নয়, পুরো রাজ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আরও তৎপরতা ও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও ন্যায্য ব্যবসা চালানোর প্রতি উৎসাহিত করার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গতি বজায় রাখা যায়।