ট্যাংরাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের কাছে নতুন বয়ান দিয়েছেন দুই ভাই প্রসূন দে ও প্রণয় দে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা ঘটনার নতুন মোড় এনেছে। ১০ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে দুই ভাই। ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি তারা এই বিষয়টি নিজেদের মধ্যেই গোপন রাখেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি বাড়ির বউদের কাছে পুরো প্ল্যানটি খুলে বলেন। দুই ভাইয়ের স্ত্রী রোমি ও সুদেষ্ণা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আত্মহত্যা করতে হলে তারা একসঙ্গে ৬ জনই আত্মহত্যা করবেন। বাচ্চাদের বাঁচিয়ে রাখতে চাননি বউয়েরা। তাদের মতে, বাবা-মা ছাড়া বাচ্চারা অসহায় হয়ে পড়বে।
১৭ জানুয়ারি রাতে বাড়ির সবাই পায়েসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খান। ১৮ জানুয়ারি সকালে ঘুম থেকে উঠে দুই ভাই দেখেন, তাদের মধ্যে ওষুধের কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি। তবে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। বাড়ির বউদের মধ্যে আংশিকভাবে কাজ করেছে ওষুধ। এরপর ১৮ তারিখ দুপুরের দিকে বউদের হাত ও গলা কাটা হয়। দুই ভাই পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, তারাই স্ত্রীদের গলা কেটে খুন করেছেন।
খুনের পর দুই ভাই ও তাদের এক ছেলে হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু সফল না হওয়ায় তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ছেলেটিকে মাঝপথে নামিয়ে দেওয়ার কথা বললে বা হাসপাতালে পাঠানোর কথা বললেও তারা রাজি হননি। দুই ভাই দাবি করেন, মন মত জায়গা না পাওয়ায় তারা দীর্ঘ পথ ঘুরেছেন। একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারার চিন্তা করলেও লরিওয়ালা ফেঁসে যাবেন বলে তা করেননি।
আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই ভাই ও নাবালক ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে প্রসূনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এবং দুই ভাইয়ের বয়ান অনুযায়ী নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছে।
এই ঘটনায় পরিবারটির ভয়াবহ পরিকল্পনা এবং তার পরিণতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এই ঘটনাকে “অমানবিক” ও “ভয়াবহ” বলে উল্লেখ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ চন্দ্র বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনো শুনিনি। পরিবারটির কী সমস্যা ছিল, তা জানা দরকার। পুলিশের উচিত কঠোর তদন্ত করে সত্যতা উন্মোচন করা।”