রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের একবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) । তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস আসল গণতন্ত্রের পথ ছেড়ে দাপট, দখল আর দমননীতির জোরে এগোচ্ছে। রাজ্যের মানুষকে ভয় দেখিয়ে, প্রশাসনকে ব্যবহার করে এবং বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দলটি নিজেদের শক্তি বজায় রাখতে চাইছে। শুভেন্দুর মতে, এই রাজনীতির ভিত মজবুত হলেও ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়ছে তৃণমূল, কারণ সাধারণ মানুষ আজ বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ।
দাপটের রাজনীতি
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikary) অভিযোগ, তৃণমূলের নেতারা এখন প্রশাসনিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে চাইছেন। গ্রামাঞ্চল থেকে শহর— সর্বত্র দেখা যাচ্ছে এক ধরনের একনায়কসুলভ মনোভাব। স্থানীয় স্তরে সাধারণ মানুষের ছোটখাটো দাবি-দাওয়ার ক্ষেত্রেও শাসকদলের নেতাদের অনুমতি প্রয়োজন হচ্ছে। তিনি বলেন, “এ রাজ্যে এখন আর মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে না। যিনি মুখ খুলছেন, তাঁকে হয় হুমকি দেওয়া হচ্ছে, না হয় মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে।”
দখলের অভিযোগ
রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সহায়ক গোষ্ঠীর তহবিল— সব ক্ষেত্রেই দখলদারির অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, ভোটের সময় বুথ দখল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের রোজগারের সুযোগ পর্যন্ত সবকিছুর উপরে শাসকদলের নিয়ন্ত্রণ চলছে। চাকরি কেলেঙ্কারি, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কাটমানির অভিযোগ তিনি ফের সামনে আনেন। শুভেন্দুর দাবি, “দলীয় কর্মীদের পকেটে কোটি কোটি টাকা ঢুকছে, অথচ গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রকৃত সুবিধা থেকে বঞ্চিত।”
দমননীতির শাসন
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikary) ভাষায়, তৃণমূল এখন আর জনগণের সমর্থনের উপর নির্ভর করছে না। বরং তারা বিরোধীদের স্তব্ধ করে রাখার কৌশল নিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলের কর্মীদের উপর হামলা, মিথ্যা মামলা, এবং পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমে হয়রানির ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। শুভেন্দু বলেন, “যেখানে প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকার কথা, সেখানে তারা ruling party’র এজেন্টে পরিণত হয়েছে। মানুষ ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”
শুভেন্দুর লড়াইয়ের বার্তা
তবে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভয় দেখিয়ে গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করা যাবে না। তিনি দাবি করেছেন, আগামী নির্বাচনে মানুষ শাসকদলকে তার জবাব দেবে। শুভেন্দুর কথায়, “ভোট বাক্সই সব থেকে বড় অস্ত্র। তৃণমূল যতই দমননীতি চালাক না কেন, বাংলার মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, শুভেন্দুর এই বিস্ফোরক মন্তব্য নিছক বক্তৃতা নয়, বরং আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ। বিজেপি এখন থেকেই মাঠ গরম করতে চাইছে। অপরদিকে, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, বিরোধীরা মানুষের সমর্থন না পাওয়ায় মিথ্যা অভিযোগে ভরসা করছে।