মহার্ঘ ভাতার দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘ লড়াইয়ের অন্যতম (DA Case) গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এগিয়ে চলেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ (DA Case) না দেওয়ার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে চলা মামলায় মঙ্গলবার ফের শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করবেন।(DA Case)
সোমবার এই মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল।(DA Case) কিন্তু রাজ্যের তরফে এদিন আদালতে অনুরোধ করা হয়, মামলার শুনানি যেন আগামী সোমবার (১১ অগস্ট) করা হয়। তবে রাজ্যের এই আর্জি খারিজ করে দেন বিচারপতিরা। বিচারপতি করোল স্পষ্ট জানান, এই মামলার শুনানি মঙ্গলবারই (৫ অগস্ট) হবে। অর্থাৎ আর বিলম্ব নয়, এই ঐতিহাসিক মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ হতে চলেছে খুব তাড়াতাড়ি।(DA Case)
কীসের মামলা?
মামলার মূল বিষয় কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা না (DA Case) দেওয়া। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা যে হারে ডিএ পান, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই হারে ডিএ দেয় না। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের প্রাপ্য থেকে। রাজ্যের প্রায় পাঁচ লক্ষ কর্মী ও তিন লক্ষের বেশি পেনশনভোগী এই মামলার সঙ্গে জড়িত।(DA Case)
২০১৬ সাল থেকে এই বিতর্ক শুরু হয়। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলেও ডিএ নিয়ে বিভ্রান্তি থেকেই যায়। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ফারাক বাড়তে থাকে। সরকারি কর্মী সংগঠনগুলি এই বিষয়ে বারবার আন্দোলনে নেমেছে। এমনকি রাজ্য সরকারি কর্মচারী কো-অর্ডিনেশন কমিটি, কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এবং অন্যান্য সংগঠন একাধিকবার হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।(DA Case)
কী বলছে রাজ্য?
রাজ্য সরকারের যুক্তি, কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজস্ব উপার্জন এবং ব্যয়ের চিত্র এক নয়। রাজ্যের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ীই ডিএ প্রদান করা হয়। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে গেলে বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে, যা বর্তমান রাজ্য বাজেটের পক্ষে বহন করা কঠিন। এই যুক্তি বারবার আদালতে তুলে ধরেছে রাজ্য।(DA Case)
তবে কর্মচারীদের পাল্টা দাবি, ডিএ কোনও দয়া নয়, বরং এটা তাদের অধিকার। জীবিকার মান বজায় রাখতে মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে ডিএ একটি আবশ্যিক উপাদান। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদান করতেই হবে — এই দাবি নিয়েই মামলার পরম্পরা।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
এর আগে হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল(DA Case) কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার জন্য। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যায়। বর্তমানে সেই মামলাই বিচারাধীন। গত কয়েক মাস ধরে একাধিকবার এই মামলার শুনানি পিছিয়েছে। কখনও মামলার নথিপত্র সম্পূর্ণ না হওয়া, কখনও বা বিচারপতির অনুপস্থিতি— বিভিন্ন কারণে দেরি হয়েছে।
তবে এবার আদালতের অবস্থান স্পষ্ট। আর সময় নয়, ৬ অগস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার এই মামলার বিস্তারিত শুনানি হবে। দেশের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এই শুনানির দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।(DA Case)
কী হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপ?
মঙ্গলবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দেয়, তার উপর নির্ভর করছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎ ডিএ। যদি আদালত রাজ্যকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে বাধ্য করে, তাহলে তা হবে কর্মচারীদের এক ঐতিহাসিক জয়। আবার, যদি আদালত রাজ্যের যুক্তিকে গ্রহণ করে, তাহলে হতাশ হতে হবে আন্দোলনরত কর্মচারীদের।
সুতরাং মঙ্গলবারের শুনানি শুধু একটি মামলার পর্ব নয়, বরং তা লক্ষ কর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীদের আর্থিক ভবিষ্যতের সাথেও সরাসরি যুক্ত। এখন দেখার বিষয়, দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়ে কোন দিকনির্দেশ দেয়।