West Bengal student strike: বিধাননগরের বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলনের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে এই ঘটনায় একাধিক শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন, যার মধ্যে কারও পা ভেঙেছে, কারও মাথা ফেটেছে। এই পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (এআইডিএসও) আগামীকাল, সোমবার রাজ্যজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের (Student Strike) ডাক দিয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিকেটিং-এর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্যানেল বাতিল করায় প্রায় ২৫,৭৩৫ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন, দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের। তাঁরা নতুন করে পরীক্ষায় বসতে অস্বীকার করেছেন এবং স্বপদে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এই আন্দোলন তীব্র রূপ নেয়, যখন আন্দোলনকারীরা বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন এবং অফিসের কর্মীদের বেরোতে বাধা দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীরা বিকাশ ভবনের ৫০০-৭০০ কর্মীকে, যার মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা ও অসুস্থ ব্যক্তিরাও ছিলেন, আটকে রেখেছিল। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ‘ন্যূনতম বলপ্রয়োগ’ করেছে। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার বলেন, “৭ ঘণ্টা সংযম দেখানো হয়েছে। কর্মীদের উদ্ধারের জন্যই লাঠিচার্জ করা হয়।” তবে, আন্দোলনকারীরা এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, পুলিশই গেট বন্ধ করে কর্মীদের আটকে রেখেছিল। একটি অডিও প্রকাশ করে চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল দাবি করেন, তারা একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন।
এই ঘটনায় ১৯ জন পুলিশকর্মী এবং বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, একজন শিক্ষিকার পা ভাঙা এবং অন্যদের শরীরে গভীর আঘাতের চিহ্ন। এই নির্যাতনের প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে ডিওয়াইএফআই আন্দোলনকারীদের সমর্থনে বিকাশ ভবনে পৌঁছায়। শনিবার আইএনটিইউসি’র সেবাদল পুলিশকে গোলাপ ফুল দিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানায়।
এআইডিএসও-র ডাকে রাজ্যের ছাত্র সংগঠনগুলো এই লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, রাজ্য সরকার চাকরিহারা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে জোর করে আন্দোলন দমন করছে। ধর্মঘটের পাশাপাশি, কলেজগুলোতে পিকেটিং-এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের শিক্ষক সমাজ, ছাত্র সংগঠন এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।