আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় তিন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড কলকাতা পুলিশের

আরজি কর (RG Kar) মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ১৪ অগস্ট রাতে ভাঙচুরের ঘটনায় তিন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করল কলকাতা পুলিশ। এই সাসপেন্ড হওয়া পুলিশ অফিসারদের মধ্যে…

আরজি কর (RG Kar) মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ১৪ অগস্ট রাতে ভাঙচুরের ঘটনায় তিন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করল কলকাতা পুলিশ। এই সাসপেন্ড হওয়া পুলিশ অফিসারদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন অ্যাসিস্টান্ট কমিশনার এবং এক জন ইনস্পেক্টর। ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় হাসপাতলের আপদকালীন বিভাগ ও ইএনটি ওয়ার্ড।

৯ অগস্ট এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় প্রতিবাদে উত্তাল হয় গোটা দেশ। প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন চিকিৎসক, ছাত্র-ছাত্রীরা, বুদ্ধিজীবীর। ১৪ অগস্ট রাত ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে নামেন মহিলারা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বেরোয় মিছিল। মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন পুরুষরাও। শান্তিপূর্ণ এই মিছিল থেকে হঠাৎই একদল লোকজন ঢুকে পড়েন আরজি কর হাসপাতলে। হাসপাতলে ঢুকেই ভাঙচুর চালান তারা। ধ্বংস করে দেওয়া হয় ইএনটি ওয়ার্ড। ভাংচুর থেকে বাদ পড়েনি প্রতিবাদী চিকিৎসকদের জন্য তৈরী মঞ্চও। পুরো ঘটনায় প্রথমদিকে নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকে। পরে পুলিশ সূত্রে জানানো হয় যে হাসপাতালে এই পরিমান জমায়েতের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তারা। কার্যত ব্যর্থতাও শিকার করেন নেন তাঁরা।

   

কয়েকদিন আগেই কেসের তদন্তভার সিবিআইকে দিয়ে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। আরজি কর চিকিৎসক খুনে তদন্তের ভার দ্রুত কলকাতা পুলিশের হাত থেকে সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলার কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখেই এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছিল যে রাজ্যের হাতে থাকা সব তথ্য এবং নথি সিবিআইকে দিতে হবে। এরপরেই মামলার দায় ভার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। ভাংচুরের রাতে রাজ্যের পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি করছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

সরকারের ‘রক্তচাপ’ বাড়িয়ে শ্যামবাজারে বিজেপিকে ধর্নার অনুমতি হাইকোর্টের!

প্রধান বিচারপতি পুলিশকে প্রশ্ন করেছিলেন যে পুলিশ থাকতেও কিভাবে বিপুল সম্যক লোকজন হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করল। তাঁকে মন্তব্য করতে শোনা যায়, “পুলিশ কি হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?”। আরজি করে ভাংচুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে, সলিসিটরজেনারেল তুষার মেহতা জানান যে তাঁরা বুঝতে পারেননি কিভাবে স্বাধীনতা দিবসের রাতে বিপুল সংখক লোকজন হাসপাতলে ঢুকে ভাংচুর চালাতে পেরেছিল। তিনি যোগ করেন যে হামলাকারীদের আটকে বলও প্রয়োগ করেছিল রাজ্য পুলিশ। পুরো ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আরজি কর হাসপাতালে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।

ইতিমধ্যে ভাংচুরের ঘটনায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। বর্তমানে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ এ। ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে সিট গঠন করেছে লালবাজার। পলিশ সূত্রে খবর ১৫ জন সদস্যের এই বিশেষ তদন্তকারী দলে থাকতে পারেন কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকেরা।