অভিযোজনের ক্ষমতায় মানুষ দেহের কালো লোম ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে চলেছে সভ্যতার৷ থেকে থেকে বন্দর-শহর তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ আবার কখনও বিরাট লম্বা আকারের স্থাপত্য, ভাস্কর্যের নজির গড়েছে। তাই যখন মানুষ আলো দেখে তার ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় তাকে সেদিকেই নিয়ে চলে৷ এই জাঁকজমকে মোড়া শহরকে দেখে মনে হচ্ছে, সে অনেকটা মায়ের মতোই। বুকে করে আগলে রেখেছে তার এই ছেলে গুলোকে৷
ছোট বেলায় শাড়ির আঁচলে করে মা হরির লুঠের বাতাসা এনে দিত৷ মাথায় ঠেকিয়ে, পরে সেটাকে গালে পুড়ে দিত। মায়ের মনোবাঞ্চা হল ছেলে আমার মস্ত বড় মানুষ হবে৷ তাই বৃষ্টির পাড়ে বসে থাকার পর, রোদে পুড়ে যাওয়ার পর, দুর্যোগে আরও কঠিন পরিস্থিতির পরেও মা নিজের ছেলেকে কখনও দুর্বলভাবে না৷ আসলে সেটা মায়ের শক্তি। জিরের কৌটোর ভিতরে ২ টাকা আমার জন্যই রাখা থাকত সেটা জেনেছি অনেক পরে৷
এমনই আজ যারা আন্দোলন করছেন, তারা অনেকেই মা। বুকের শিশুটিকে নিয়ে বসেছে ধর্নামঞ্চে। জানেনা সারাদিন কিভাবে থাকবে, কি খাওয়াবে! চারিদিকে মাতৃবন্দনার আড়ম্বর দেখে মনে হয়েছে, কেউ যদি ওদের মুখের দিকে একটিবার তাকিয়ে দেখত। তাদের নিয়ে স্লোগান আওড়ে বলত, করলাম আমরাও কিছু। সেটা হচ্ছে না।
বরং এমন কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করানো হচ্ছে, যা দেখে মনে হয় বৃহৎ কিছু আয়োজন করা হয়েছে। সমস্ত কিছু যেন সময়ের অপেক্ষা৷ এদিকে তাদের অপেক্ষার দিন ৫৭০ দিনে ছুঁইছুঁই৷ একাধিক বৈঠকে একটু আলোর দিশা খুঁজে বেড়াচ্ছে তারাও৷ জলে ভেজা চোখগুলো আজ উৎসবের দিনে ঝাপসা হয়ে গোটা শহরটাকে দেখছে। আন্দোলনের চিৎকার একটা সময় ম্লান হয়ে পড়ছে। শরীরের ভাষা ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবুও তাদের বিশ্বাস এই উৎসবের মরশুমে তারাও পাবেন চাকরির খাম৷ এই লড়াইয়ে জয় তাদের নিশ্চিত৷