SSC Scam: সুপার নিউমেরারি বা অতিরিক্ত শূন্য পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ বহাল রাখল। বিচারপতি স্মিতা দাস দে এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার জানিয়ে দেয়, সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে এই মুহূর্তে কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। ফলে আপাতত ওই শূন্য পদে নিয়োগের পথ বন্ধই থাকছে।
গত ৭ মে, কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানায়, সুপার নিউমেরারি বা অতিরিক্ত শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে। আদালতের ওই নির্দেশে বলা হয়, নিয়োগ নিয়ে যে আইনগত জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এই রায়ের পরেই একাধিক চাকরিপ্রার্থী ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান। তাঁদের বক্তব্য ছিল, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা অপেক্ষা করছেন এবং এই পদে নিয়োগের অনুমতি না পেলে তাঁদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে।
ডিভিশন বেঞ্চে শুনানিকালে মামলাকারীদের আইনজীবী পার্থসারথী সেনগুপ্ত জানান, “দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে চাকরিপ্রার্থীরা অপেক্ষায় রয়েছেন। ইতিমধ্যেই তারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং প্রশিক্ষণও সম্পন্ন করেছেন। এখন যদি নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে, তাহলে তাঁদের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়বে।” তিনি আরও দাবি করেন, সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে যথাযথ অনুমতি নিয়েই এই অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করা হয়েছিল। ফলে এতে অবৈধ কিছু নেই।
তবে ডিভিশন বেঞ্চ সেই যুক্তি মানেনি। বিচারপতিরা জানান, যেহেতু সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ আইনি ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে এবং তার সম্পূর্ণ শুনানি এখনও হয়নি, তাই সেই নির্দেশ আপাতত বলবৎ থাকবে। আদালত আরও স্পষ্ট করে দেয় যে, মূল মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সুপার নিউমেরারি পদে নিয়োগে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
এই রায়ের ফলে নতুন করে এক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বহু প্রার্থী ইতিমধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে চাকরির প্রতীক্ষায় রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই দাবি করছেন, সুপার নিউমেরারি পদে নিয়োগ দিলে সরকার কোনও নিয়ম ভঙ্গ করছে না, বরং রাজ্যের প্রয়োজনের নিরিখে অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হয়েছিল।
প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে দ্রুত নিয়োগ চালু করাই সরকারের লক্ষ্য ছিল। রাজ্যে বহু স্কুলে শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে, সেই ঘাটতি পূরণে সুপার নিউমেরারি পদে নিয়োগ কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারত। কিন্তু আদালতের স্থগিতাদেশে সেই প্রচেষ্টা আপাতত বাধাপ্রাপ্ত হল।
আদালতের এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলেও চর্চা শুরু হয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব এবং পূর্বের দুর্নীতির অভিযোগের ফলেই আজ এই পরিস্থিতি। যদিও শাসকদল বলছে, রাজ্যের প্রয়োজন মেটাতেই অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছিল এবং সমস্ত প্রক্রিয়াই ছিল আইনসম্মত।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি কবে হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। তবে যতক্ষণ না চূড়ান্ত রায় আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকছে, যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বড় ধাক্কা।