South Kolkata Law College: নিরাপত্তায় বড় বদল, কসবার ঘটনার পর কড়া নজরদারি কলকাতার কলেজগুলিতে

সাউথ কলকাতা ল কলেজে (South Kolkata Law College) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গোটা শহরের শিক্ষা মহল তোলপাড়। এই নৃশংস ঘটনার অভিঘাতে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে…

Sealdah Businessman Accused of Assaulting Calcutta University Students, Allegedly Calling Them ‘Bangladeshi’

সাউথ কলকাতা ল কলেজে (South Kolkata Law College) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গোটা শহরের শিক্ষা মহল তোলপাড়। এই নৃশংস ঘটনার অভিঘাতে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই একাধিক কলেজ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার পথে হাঁটছে। শহরের নামী কলেজগুলির ক্যাম্পাসে এখন জারি হয়েছে একাধিক নতুন নির্দেশিকা। মূল লক্ষ্য— যেকোনও মূল্যে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।

আশুতোষ কলেজ, হাজরা ল কলেজ, যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজ সহ একাধিক নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করেছে। এখন থেকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে পড়ুয়াদের বৈধ পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। এমনকি, প্রাক্তন ছাত্র বা বহিরাগতদের ক্ষেত্রেও কলেজ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ।

   

যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘সাধারণত সকাল ১১টার পর ক্লাস শেষ হয়ে যায়। পড়ুয়ারা বাড়ি ফিরে যায়। যদি কেউ শিক্ষাগত কারণে ক্যাম্পাসে থাকতে চায়, তাহলে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে। কারণ, আমাদের কলেজ অন্য একটি কলেজের সঙ্গে ক্যাম্পাস শেয়ার করে। ফলে নিরাপত্তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’’

হাজরা ল কলেজেও বহিরাগতদের প্রবেশে জারি হয়েছে নতুন নিয়ম। জানানো হয়েছে, বহিরাগত কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে তাঁকে নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এবং ক্যাম্পাসে আসার কারণ লিখে রেজিস্টারে সই করতে হবে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার বাইরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, এখন থেকে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ। যদি খুব জরুরি কোনও প্রয়োজন থাকে, তাহলে লিখিতভাবে সমস্ত তথ্য জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে।

Advertisements

এদিকে, মেয়েদের কলেজগুলিতে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেন জানিয়েছে, বিকেল ৫টার পর কলেজ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। কোনও ক্লাস বা প্রোগ্রাম না থাকলে কোনও ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে থাকতে দেওয়া হবে না। এমনকি, স্টুডেন্ট ফেসিলিটি রুম, যোগ কেন্দ্র এবং জিম বিকেল ৪টার মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।

স্কটিশ চার্চ কলেজ ও সুরেন্দ্রনাথ কলেজেও ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র যাচাই করা হচ্ছে। বহিরাগতদের ক্ষেত্রে নাম, ফোন নম্বর, পরিচয় ও আগমনের কারণ লগবুকে লিখে তবেই ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বেশ কিছু কলেজে ছাত্র ইউনিয়নের ঘরও তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্কটিশ চার্চ কলেজ, আশুতোষ কলেজ, হীরালাল কলেজের মতো প্রতিষ্ঠান। এখন আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কোনও কলেজ কর্তৃপক্ষ। সব কলেজই নিজেদের মতো করে নিরাপত্তা জোরদার করছে।

সাউথ কলকাতা ল কলেজের মর্মান্তিক ঘটনার পর, গোটা শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার পথে হাঁটা হয়েছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য একটাই— পড়ুয়াদের সুরক্ষা। ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনও ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্যই একপ্রকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছে শহরের কলেজ প্রশাসন।