সোমবার রাজ্যজুড়ে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা (Kolkata Police)। ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এসএফআই। সেইদিনই শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, তাই যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা রবিবার ভবানীভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কাল কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি রয়েছে, তবে উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে, রাস্তায় প্রচুর সংখ্যক পুলিশ থাকবে। যাতে কেউ কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখা হবে।’ তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বরটি হল – ৯৪৩২৬১০০৩৯। পরীক্ষার্থী অথবা অভিভাবকরা প্রয়োজনে ১০০ নম্বরে কল করতে পারেন। এর ফলে স্থানীয় থানার পুলিশ (Kolkata Police) দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
শুধু কলকাতায় নয়, গোটা রাজ্যেই সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ প্রহরা থাকবে। পরীক্ষার দিন যদি কেউ কোনও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ কমিশনার জানান, রাস্তায় পর্যাপ্ত পরিবহণের ব্যবস্থা করা হবে যাতে পরীক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারে।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ২০২৫-এর শুরু হবে সোমবার, ২রা মার্চ থেকে এবং শেষ হবে ১৮ই মার্চ। পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে শেষ হবে। পুলিশের (Kolkata Police)পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রত্যেক ঘরে দু’জন করে পর্যবেক্ষক রাখা হবে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, প্রতি ২৫ জন পরীক্ষার্থী পিছু একজন পর্যবেক্ষক রাখার নিয়ম করা হয়েছে। যদি কোন ঘরে ৫০ জনের বেশি পরীক্ষার্থী থাকে, সেখানে তিনজন পর্যবেক্ষক রাখা হবে। স্কুলগুলিতে এবার থেকে ছোট ছোট প্যাকেটে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। প্রশ্নপত্র খোলার কাজ করবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অথবা ভেনু সুপারভাইজার। কিন্তু, প্রশ্নপত্র খোলার কাজ হবে পরীক্ষার হলে গিয়ে, পরীক্ষার্থীদের সামনে।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে সবার দায়িত্বও স্পষ্ট করা হয়েছে। ভেনু সুপারভাইজারদের পরীক্ষাকেন্দ্রে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। পরীক্ষার ঘরগুলোতে পর্যবেক্ষকরা সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছাবেন এবং তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে নেওয়া হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে অবাঞ্ছিত কোনও ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবেন না। ক্যালকুলেটর ছাড়া কোনো মোবাইল ফোন বা বৈদ্যুতিন যন্ত্র পরীক্ষার হলে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হবে না। কোনও ব্যক্তি মোবাইল বা অন্য কোনো যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে তার পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন, ধর্মঘট ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা – এই তিনটি বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি ও প্রশাসনিক মহলে। পরীক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন, নিরাপত্তা ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানে পুলিশ অত্যন্ত সতর্ক থাকবে। পরীক্ষার্থীদের সমস্যা যেন না হয়, তা নিয়ে পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজ্য সরকার, পুলিশ এবং প্রশাসন এবার একযোগে কাজ করছে যাতে রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দিন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অস্বস্তি না ঘটে এবং পরীক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের পরীক্ষা দিতে পারে।