কলকাতা ও হাওড়া—এই দুই শহরকে সংযুক্তকারী বিদ্যাসাগর সেতু বা দ্বিতীয় হুগলি সেতু (Second Hooghly Bridge) রবিবার, ২৪ অগস্ট ভোর থেকে রাত পর্যন্ত সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে। এদিন ভোর ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই সেতু দিয়ে কোনওরকম যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। শুধু সেতুই নয়, সেতুর (Second Hooghly Bridge) সমস্ত র্যাম্পও বন্ধ থাকবে। ফলে বহু অফিসযাত্রী, পর্যটক, ট্রাক চালক এবং সাধারণ মানুষকে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হবে। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে এবং ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে বিকল্প রুটের নির্দেশনাও জানানো হয়েছে।
কেন বন্ধ থাকছে বিদ্যাসাগর সেতু?
জানা গিয়েছে, সেতুর(Second Hooghly Bridge) নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কাজের জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় হুগলি সেতু দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলির সঙ্গে হাওড়ার যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়কপথ। প্রতিদিন লক্ষাধিক গাড়ি এই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে সেতুর কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত পরিদর্শন ও মেরামতির কাজ জরুরি। সেই কাজ নির্বিঘ্নে করার জন্যই একটানা ১৬ ঘণ্টা ধরে সেতু বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
যাত্রীদের জন্য সমস্যা ও বিকল্প রাস্তা
রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই সেতু(Second Hooghly Bridge) বন্ধ থাকায় শহরের যানচলাচলে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। কলকাতা থেকে হাওড়া কিংবা হাওড়া থেকে কলকাতায় যাতায়াত করতে হলে যানবাহনকে বিকল্প রুট নিতে হবে।
হাওড়া থেকে কলকাতা আসতে হলে: সাধারণ যানবাহনকে ভিক্টোরিয়া ব্রিজ (হাওড়া ব্রিজ) ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া নিমতলা ঘাটের দিক থেকে ফেরি পরিষেবাও পাওয়া যাবে।
কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে যেতে হলে: প্রিন্সেপ ঘাট ও বাগবাজার ঘাট থেকে ফেরি পরিষেবা নেওয়া যেতে পারে। হাওড়া ব্রিজ হয়ে যানবাহন হাওড়া স্টেশন, দাদপুর কিংবা ডোমজুড়ের দিকে যেতে পারবে।
ট্রাক ও ভারী যানবাহন: এই সময়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে চলাচল করতে না পারায় এগুলিকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে ডানকুনি ঘুরে আসতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিশেষ পুলিশ মোতায়েন থাকবে যাতে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
সাধারণ মানুষের অসুবিধা
এই সেতু (Second Hooghly Bridge) প্রতিদিন গড়ে প্রায় আড়াই থেকে তিন লক্ষ যানবাহনের চাপ বহন করে। অফিসযাত্রীদের পাশাপাশি বিমানবন্দরের দিকে যাতায়াতকারী গাড়িও এই রাস্তাই বেশি ব্যবহার করে। ফলে রবিবার যারা বিমানে যাতায়াত করবেন তাদের অনেকটাই আগে বেরোতে হবে। একইভাবে দীর্ঘ দূরত্বের বাস যাত্রীদেরও বিকল্প পথে ঘুরে যেতে হবে, ফলে সময় বেশি লাগবে।
ফেরির বাড়তি চাপ
হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে ফেরি পরিষেবার উপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের তরফে ফেরি সার্ভিসের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাগবাজার, প্রিন্সেপ ঘাট, নিমতলা ঘাট, আর্মেনিয়ান ঘাট প্রভৃতি ফেরিঘাটে অতিরিক্ত লঞ্চ নামানো হতে পারে।
প্রশাসনের পরামর্শ
কলকাতা পুলিশ এবং সেতু (Second Hooghly Bridge) কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, অযথা যানজট এড়াতে রবিবার যারা শহরে ঘোরাঘুরি বা অপ্রয়োজনীয় যাতায়াতের পরিকল্পনা করেছেন, তারা সেটা এড়িয়ে চলুন। যাদের জরুরি কাজ রয়েছে, তারা বিকল্প রুট আগে থেকে জেনে নিন এবং পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বেরোবেন।