শারদীয়ার আগমনের প্রাক্কালে বাংলার রাজনীতিতে ফের নয়া চর্চার জন্ম দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। জানা গিয়েছে, পুজোর আগে মহিলা ভোটারদের মন জয় করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপি (BJP) । আসন্ন মহালয়া উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মহিলাদের হাতে শাড়ি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই উদ্যোগ আসলে রাজ্য বিজেপির(BJP) এক কৌশলগত পদক্ষেপ। পশ্চিমবঙ্গের ভোট রাজনীতিতে মহিলা ভোটারের ভূমিকা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত তৃণমূল কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের শাসনে মহিলাদের একটি বড় অংশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থাশীল থেকেছেন। ফলে ভোটের আগে রাজ্য বিজেপি সেই ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে চায়। সেই লক্ষ্যেই মহালয়াকে কেন্দ্র করে এই শাড়ি বিতরণ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে মহিলা ভোটারদের নানা প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের দিকে টেনে এনেছে— যেমন কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার ইত্যাদি। বিজেপির নেতৃত্ব বুঝতে পারছে, শুধু রাজনৈতিক প্রচারে নয়, সাংস্কৃতিক আবহ ও উৎসবের আবেগকে কাজে লাগিয়েও ভোটারদের মন ছোঁয়া যায়। শারদীয়ার আবহে মহালয়া একটি বিশেষ আবেগের দিন। ভোরবেলা মহিষাসুরমর্দিনীর ধ্বনি থেকে শুরু করে দেবী দুর্গার আগমনের অনুভব— এই সময় বাঙালির ঘরে ঘরে উচ্ছ্বাস। এই আবেগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বিজেপির ঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলো শাড়ি উপহার দেওয়ার কর্মসূচি নেবে বলে সূত্রের খবর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পদক্ষেপ শুধু ভোটের কৌশল নয়, একধরনের নরম ভাবমূর্তি তৈরির প্রচেষ্টা। বিজেপির(BJP) বিরুদ্ধে রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা ও সংবেদনশীলতা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বারবার আক্রমণ শানিয়েছে। তাই মহালয়াকে সামনে রেখে এমন উদ্যোগ রাজ্য বিজেপিকে মহিলাদের কাছে এক ‘সংবেদনশীল’ দল হিসেবে তুলে ধরতে পারে। রাজনীতির ময়দানে পুজোর আগে এ ধরনের সামাজিক কর্মসূচি নতুন কিছু নয়। অতীতে বিভিন্ন দলই পুজো বা উৎসবকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বিজেপির এই শাড়ি বিতরণ কর্মসূচি যে বিশেষভাবে মহিলাদের ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়েই, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ কম।