‘আর অপেক্ষা নয়’, ২৫২ ঘণ্টা পরে চূড়ান্ত পদক্ষেপ শান্তনুর

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত ঘটনায় মুখ খুলেই রাজনৈতিক বিপাকে পড়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ এবং চিকিৎসক শান্তনু সেন। এরপর পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁর…

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত ঘটনায় মুখ খুলেই রাজনৈতিক বিপাকে পড়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ এবং চিকিৎসক শান্তনু সেন। এরপর পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁর রেজিস্ট্রেশন দুই বছরের জন্য বাতিল করে দেয়। সেই সিদ্ধান্তকে শান্তনু সেন কলকাতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানালে, ৭ জুলাই বিচারপতি অমৃতা সিনহা তাঁর পক্ষে রায় দেন। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত আইনসঙ্গত নয়।

Advertisements

তবে আদালতের নির্দেশ কার্যকর হলেও বাস্তবে তা প্রতিফলিত হচ্ছে না—এই অভিযোগ তুলে এবার পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলকে আইনি চিঠি পাঠালেন শান্তনু সেন। তাঁর অভিযোগ, আদালতের রায় প্রকাশ্যে আসার ১১ দিন পরও কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিলের আদেশ এখনও দৃশ্যমান। তাঁর মতে, এটি আদালত অবমাননার শামিল। সেই কারণেই আইনজীবীদের পরামর্শে তিনি আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলকে।

   

এই প্রসঙ্গে শান্তনু সেন সমাজমাধ্যমেও কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। একাধিক পোস্টে তিনি কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। তিনি লেখেন, “২৫২ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, তবু এখনও পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে আমার রেজিস্ট্রেশন বাতিলের নির্দেশ জ্বলজ্বল করছে। আদালতের রায় তাদের আইনজীবী ও আমার আইনজীবীরা জানানোর পরেও। আমি নিজেও জানিয়েছি। তা সত্ত্বেও এখনও তা ঠিক করা হয়নি। এটা কি আদালত অবমাননা নয়?”

শান্তনুর এই অভিযোগ যে নিছকই প্রশাসনিক ত্রুটি বলে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, তা বোঝা যাচ্ছে তাঁর সরাসরি আক্রমণ থেকে। তিনি লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায়ের প্রতিহিংসাপরায়ণতার আরও একটি দৃষ্টান্ত এটা।” এখানেই থেমে থাকেননি শান্তনু। তিনি আরও বলেন, “এটা একটা সুপরিকল্পিত হেনস্থার চেষ্টা। আমি মুখ খুলেছি বলেই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, সুদীপ্ত রায় নিজে একজন তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে, শান্তনু সেন আরজি কর কাণ্ডে দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে কথা বলার পরে তৃণমূল তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করে দেয়। সেই থেকে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়েছে। শান্তনুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাই মূল কারণ। এই পরিস্থিতিতে তিনি ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছেন।

আইনজ্ঞ মহলের মতে, যদি কোনও আদালতের নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয় বা বাস্তবায়িত না করা হয়, তাহলে তা স্পষ্টভাবেই আদালত অবমাননা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। শান্তনু সেনের আইনজীবীরা বিষয়টি আদালতের নজরে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে।