Santanu Sen: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শান্তনু সেনের প্রত্যাবর্তন? রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন

বাংলার রাজনৈতিক মহলে সম্প্রতি এক নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে, যা নিয়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে শান্তনু…

Santanu Sen Joins Abhishek Banerjee's Meeting: Speculation About His Political Comeback

বাংলার রাজনৈতিক মহলে সম্প্রতি এক নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে, যা নিয়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে শান্তনু সেনের উপস্থিতি এবং এই বৈঠকে যোগদান, এক নতুন আভাস দিয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

প্রশ্ন উঠছে, শান্তনু সেন কি আবার তৃণমূল কংগ্রেসের মূলস্রোতে ফিরে আসছেন? একসময় তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত শান্তনু সেন, দলের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক অটুট ছিল, এবং সাম্প্রতিক এই বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি আবারও দলের সঙ্গেই থাকবেন বলে জল্পনা চলছে।

   

শান্তনু সেন, যিনি এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তার রাজনৈতিক জীবন একাধিক উত্থান-পতন দেখেছে। ২০২১ সালে আরজি কর কাণ্ডের পর, তিনি প্রথমবার নিজের মতামত প্রকাশ করেছিলেন এবং দলের বিরুদ্ধে অনেক বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি সরাসরি নিশানা করেছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা সন্দীপ ঘোষকে, যিনি তখন আরজি কর অধিকারী ছিলেন। তার এ ধরনের মন্তব্যের পর দলের অন্দরে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং শান্তনু সেনকে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এমনকি, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাকে সাসপেন্ডও করা হয়। দলের বিরুদ্ধে বেআইনি মন্তব্য করার কারণে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। এরপর থেকে তাকে আর তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তবে, যদিও তিনি কিছুদিন আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেবাশ্রয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন, তাতে কিছুটা আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে শান্তনু সেন হয়তো কিছুদিনের মধ্যে আবার দলের মূলধারায় ফিরবেন।

গত শনিবার, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে বিভিন্ন রাজ্য নেতৃত্ব ও দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের লিঙ্ক শান্তনু সেনকে পাঠানো হয়েছিল এবং তিনি তাতে যোগ দেন। এই বৈঠকে শান্তনু সেনের উপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে—কী সত্যিই কি তিনি তৃণমূলের মূলস্রোতে ফিরছেন? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠকে যোগ দিয়ে শান্তনু সেন তার রাজনৈতিক ভৌতিক অস্তিত্ব ফের প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। যদিও দলীয় নেতারা এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী দিনে তার ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।

শান্তনু সেনের কামব্যাক যদি সত্যি হয়, তবে তা দলের জন্য কিভাবে কার্যকরী হতে পারে? অনেকেই মনে করছেন, শান্তনু সেনের এই কামব্যাক শুধুমাত্র এক ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের জন্যও হতে পারে। তিনি একসময় দলের অন্যতম মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং তৃণমূলের নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে, তাকে দল থেকে সাসপেন্ড করার পর তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তার বিশেষ গুরুত্ব ছিল। এবারের বৈঠকে তার উপস্থিতি থেকেই এটি পরিষ্কার যে, দলীয় কার্যক্রমে তার একটি নতুন ভূমিকা থাকতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শান্তনু সেনের কামব্যাক তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে। তৃণমূলের মধ্যে যখন বিভিন্ন গ্রুপিংয়ের সমস্যা চলছে, তখন শান্তনু সেনের মতো অভিজ্ঞ নেতা দলের মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনার কাজে সহায়ক হতে পারেন। তার সাম্প্রতিক উপস্থিতি থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হয়তো দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে ফিরতে পারেন বা দলের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করবেন।

তবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে এও মনে করা হচ্ছে যে, শান্তনু সেনের এই ফিরে আসা কেবল তার নিজের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কৌশলও হতে পারে। এর মাধ্যমে তিনি দলের মধ্যে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে চাইছেন, যা তাকে ভবিষ্যতে আরও বড় রাজনৈতিক পদে অধিকারী করতে পারে।

অবশ্য, শান্তনু সেনের ফিরে আসার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে, যা ভবিষ্যতে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। তবে, এখনো কিছু বলা কঠিন, কারণ রাজনীতি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল এবং কোনো একটি পরিস্থিতি মুহূর্তে বদলে যেতে পারে। তবে একথা নিশ্চিত যে, শান্তনু সেনের ফিরে আসা রাজনৈতিক আলোচনার একটি বড় বিষয় হয়ে উঠেছে এবং আগামী দিনে এটি আরও স্পষ্ট হবে যে, তিনি দলের মূলধারায় ফিরছেন, না কি তাঁর রাজনৈতিক পথে কোনো নতুন পরিবর্তন আসছে।