আরজিকর হাসপাতালের চিকিৎসক হত্যাকাণ্ড এবং তথ্য-প্রমাণ লোপাটের ঘটনায় শিয়ালদা আদালতে সিবিআই এর তরফে গ্রেফতারের ৯০ দিনের মাথায় সন্দীপ (Sandip) ঘোষের জামিন (bail) মঞ্জুর করেছেন বিচারক। তবে জামিন পাওয়ার পরেও মুক্তি মিলেনি তার। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শিয়ালদা কোর্ট থেকে সন্দীপ ঘোষকে সরাসরি প্রেসিডেন্সি (Presidency) জেলে (Jail) নিয়ে যাওয়া হয়। আর্থিক দুর্নীতির মামলায় তাকে প্রেসিডেন্সি জেলেই থাকতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিবিআই (CBI) আদালতে জানায়, তারা সন্দীপ ঘোষ এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিতে পারেনি। এর ফলে সন্দীপ ঘোষ জামিন পেলেও, আদালত তার মুক্তি অনুমোদন করেনি। সিবিআই-এর আইনজীবী এদিন এক লাইনে তার বক্তব্য শেষ করেন, “সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিতে পারছিনা।” এর পরেই আদালত জামিন মঞ্জুর করলেও, সন্দীপ ঘোষকে প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail) পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, আরজিকর হাসপাতালের চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডে এবং তথ্য-প্রমাণ লোপাটের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত শুরু করে। সন্দীপ (Sandip) ঘোষের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল, হাসপাতালের তথ্য লোপাট এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার। তবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ সিবিআই এখনও পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট জমা দিতে পারেনি। সিবিআইয়ের তরফে দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত চললেও, চার্জশিট জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি, যা তদন্তের গতি নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।
এদিকে, চিকিৎসক মহলও এই ঘটনার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছেন, “যতদিন পর্যন্ত অপরাধীদের শাস্তি না হয়, ততদিন আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।” চিকিৎসকদের মতে, প্রশাসনের কাজের গাফিলতির ফলে চিকিৎসকরা নিজেরা কীভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যাবেন, তা নিয়ে চিন্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও এই ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে, যদি তদন্ত এমনভাবে চলতে থাকে, তবে কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে? সবার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত যখন সিবিআই দাবী করছে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের মতো গুরুতর অপরাধ রয়েছে, কিন্তু তদন্তের গতি এত ধীর।
এদিকে, আদালত জামিন মঞ্জুর করার পরেও সন্দীপ ঘোষের মুক্তি না পাওয়ার ঘটনা নিয়ে আলোচনা চলছে। একদিকে, জামিন পাওয়ার পরেও তাকে জেলে রাখা হয়েছে, অন্যদিকে সিবিআই এখনও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিতে পারছে না, ফলে মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।
এখনো পর্যন্ত সিবিআইয়ের কাজের গতিপ্রকৃতি এবং তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে জামিন পেলেও সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত থাকবে, এবং আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর নির্ভর করবে তার ভবিষ্যত।