রাজ্যজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করা আর জি কর (RG Kar) মেডিক্যাল কলেজ (Medical College) ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের (murder) ঘটনা এখন আদালতের মুখোমুখি। এই মামলায় সিবিআই (CBI) দীর্ঘ তদন্তের পর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করেছে। শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে প্রায় ৫০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পর, গত ১১ নভেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়, এবং এক মাস ধরে চলা এই প্রক্রিয়া এখন শেষ হয়ে গেছে।
এই মামলাটি শাসক দলের একাধিক গুঞ্জনের মধ্যে ছিল এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে এই ঘটনার পেছনে বিভিন্ন তত্ত্ব কল্পনা করেছিলেন। মামলার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়, যিনি তরুণী চিকিৎসকের খুনের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে, তার বিরুদ্ধে সিবিআই নানা গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বে প্রায় ৫০ জন সাক্ষী তাদের বক্তব্য আদালতে দিয়েছেন, এবং এসব সাক্ষ্যের মধ্যে মামলার কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ স্থির করা হয়েছে।
শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, আদালতে সঞ্জয়ের (Sanjay) আত্মপক্ষ (defense) সমর্থনের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। বিচারক তাকে প্রশ্ন করতে পারেন, এবং সঞ্জয় যদি তার পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য জানাতে চান, তাহলে সেটাও আদালতে পেশ করার সুযোগ পাবেন। আদালত তার বক্তব্য শুনে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সঞ্জয়ের আত্মপক্ষ সমর্থনের পর, তার যদি কোনও সাক্ষী থাকে, তাহলে সেগুলোর তালিকা আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হবে। সঞ্জয়ের আইনজীবী চাইলে এই সাক্ষীদেরও আদালতে হাজির করতে পারবেন।
এদিকে, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণ পেশ করা হয়েছে, যা তদন্তের সময় সামনে এসেছে। এই মামলার প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আদালতে সঞ্জয়ের বক্তব্য শুনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিচারকের কাছে সঞ্জয়ের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রমাণ শক্তিশালী হলে, তার জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করতে পারে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, পরিবারের সদস্যরা এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অন্যান্য চিকিৎসকরা মামলার নিষ্পত্তি দ্রুত হওয়ার আশা করছেন। তারা চাইছেন যাতে তাদের সহকর্মী এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের নাম আরও ক্ষুন্ন না হয়। ইতোমধ্যে ঘটনাটি প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, এবং সামাজিক মাধ্যমে এটি নিয়ে আলোচনা চলছে। সঞ্জয়ের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন যে, সিবিআই তদন্তে কিছুটা পক্ষপাতিত্ব হয়েছে, তবে আদালতে তা প্রমাণিত হয়নি।
এখন আদালত অভিযুক্ত সঞ্জয়ের (Sanjay) বক্তব্য শুনবে এবং তারপরই মামলার পরবর্তী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিবে। সঞ্জয়ের (Sanjay) পক্ষের আইনজীবী যদি নতুন কোনো সাক্ষীর প্রস্তাব করেন, তবে তা বিচারক মূল্যায়ন করবেন। এই মামলার সিদ্ধান্ত, রাজ্যজুড়ে এর প্রভাব এবং জনগণের মধ্যে এর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরবর্তী দিনগুলিতে স্পষ্ট হবে।