HomeWest BengalKolkata Cityভাঙচুরকাণ্ডে আর জি করের প্রিন্সিপালকে রাতেই সিজিওতে নিয়ে গেল 'অসন্তুষ্ট' সিবিআই!

ভাঙচুরকাণ্ডে আর জি করের প্রিন্সিপালকে রাতেই সিজিওতে নিয়ে গেল ‘অসন্তুষ্ট’ সিবিআই!

- Advertisement -

আর জি কর কাণ্ডে (R G Kar) কার্যত বেনজির ঘটনা। ১৫ ই আগস্ট এর মধ্যরাত্রে আর জি করে (R G Kar) উন্মত্ত জনতার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে যে, তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্যই পরিকল্পিতভাবে এই আক্রমণ (R G Kar)। আর তা নিয়ে ১৫ই অগাস্টের সন্ধ্যেবেলা থেকেই দফায় দফায় সিবিআই জেরা করে বর্তমান উপাচার্য সুহৃতা পালকে।

সিবিআই সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী আর জি করের বর্তমান অধ্যক্ষের এই ঘটনায় ভূমিকা এবং বিভিন্ন উত্তর নিয়ে তারা অসন্তুষ্ট। ফলে আরও বিশদ জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের সুবিধার জন্য এই মুহূর্তে তাকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে ও সিবিআই এর আধিকারিকদের টিম কথা বলেছেন। তাদের থেকে বিশদে মধ্যরাত্রের এই আক্রমণ এবং ভাঙচুরের ঘটনার যাবতীয় তথ্য তারা আপাতত সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন।

   

আন্দোলনকারী ডাক্তারদের বক্তব্য থেকে জানা যাচ্ছে যে আধিকারিকরা তাদের বর্তমান অধ্যক্ষকে এই মুহূর্তে সিজিও কমপ্লেক্স-এ নিয়ে যাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁকে আবারও হসপিটালে ফেরত নিয়ে আসার কথাও শোনা যাচ্ছে। সিবিআই আধিকারিকদের টিমের দুজন অফিসার এবং দুজন ফরেনসিক এক্সপার্ট রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেবেলা থেকেই তারা দফায় দফায় রাতের এই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিলেন। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের উত্তরে তারা সন্তুষ্ট নন বলেই জানা যাচ্ছে। আর তাই আরও বিশদে তথ্য সংগ্রহ এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অধ্যক্ষা সুহৃতা পালকে রাত্রিবেলাতেই তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহিলাদের রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়েছিল গোটা রাজ্য এবং দেশজুড়ে। আর যে কারণে এই রাত্রে বেলায় মহিলাদের পথে নামা, সেই সেই আরজি করেই কার্যত মধ্যরাত্রে উন্মত্ত বহিরাগতদের অবাধ ভাঙচুর তাণ্ডবের ছবি উঠে এসেছে। এমনকি হসপিটালে কাজ করা বিভিন্ন নার্স এবং অন্যান্য কর্মচারীদেরকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণ এবং প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন তাণ্ডবকারীরা এমনটাই দাবি আরজি করে কর্তব্যরত নার্সদের একাংশের।

সব ক্ষেত্রেই বিক্ষোভরত চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগের তির মূলত পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকে। হাসপাতালের প্রিন্সিপাল থেকে শুরু করে একাধিক পদস্থ ব্যক্তি সে সময় ফোন তোলেননি এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে যারাই ফোন তুলেছে তারাই কার্যত অসহায়ের মতো দায়সারা কথা বলে ফোন রেখে দিয়েছে বলে অভিযোগ। স্বাধীনতা দিবসের সকাল থেকেই যা নিয়ে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা হসপিটালের কর্মচারী মহল থেকে শুরু করে ডাক্তাররা।

কিন্তু কেন এই আক্রমণ এবং আক্রমণ কী সুপরিকল্পিত? ইতিমধ্যেই তা নিয়ে নানা তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছে। সিবিআই এই মুহূর্তে খুন এবং ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত করছে। ঘটনার ‘প্লেস অফ আকারেন্স’ আর জি করে কী তাই পরিকল্পিতভাবে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাতেই আক্রমণ? এবার সিবিআই অফিসারেরাও সেই সংক্রান্ত তথ্য তালাশ করবার জন্য হাজির হয়ে গিয়েছিলেন আরজি করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে একাধিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাত্রে উপস্থিত থাকা লোকজনদের। প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রী যারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাদের সাথেও সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারেরা কথা বলেছেন দীর্ঘক্ষণ। এমনকি প্রয়োজনে তাদেরকে আরও সাহায্যের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাতেই কি আক্রমণ চালানো হয়েছে সেই বিল্ডিংয়ে? যার চার তলাতে রয়েছে সেই সেমিনার হল যেখানেই এই পৈশাচিক ধর্ষণ এবং খুনের কান্ড ঘটেছে। যদিও চার তলার সেমিনার হল অক্ষত বলেই দাবি কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু কেন সেই বিল্ডিংকেই টার্গেট করা হলো? পরিকল্পিতভাবেই কী ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে শুরু করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভাঙচুর করে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হল? তাহলে কী কোনো তথ্য প্রমাণ বা কাগজপত্র লোপাটের আপ্রাণ চেষ্টাতেই আক্রমণ? সেই উত্তর খুঁজতেই মরিয়া সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।

আর তাই প্রশ্নের উত্তরে সন্তুষ্ট না হওয়াতে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সুহৃতা পালকে সিজিওতে নিয়ে গেল সিবিআই। এবার সেখানে বসিয়ে তাহলে কী তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? আপাতত সেই সম্ভাবনাই প্রবল। কিন্তু রাত্রে বেলায় তাড়াহুড়ো করে তাঁকে সিজিওতে নিয়ে যাওয়াতে, ঘটনার গুরুত্ব এবং অভিঘাতের তাৎপর্য অনেক বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে। তাহলে কী সিবিআইও মনে করছে যে, তথ্য প্রমান লোকের লোপাটের জন্যই এই আক্রমণ?

এমনিতেই দিনভর প্রিন্সিপালকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি দিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। অধ্যক্ষর বক্তব্যতে কোনোভাবেই কর্ণপাত করেননি ক্ষুব্ধ ইন্টার্নেরা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদেরও ক্ষোভ। কলকাতা পুলিশ যদিও একাধিক ছবি শেয়ার করে ‘হুলিয়া’ জারি করেছে। কিন্তু তাতেও কোন ভরসা রাখছেন না আর জি করের প্রতিবাদী ডাক্তারেরা। ঘটনার দিন পুলিশের ভুমিকায় তারা কার্যত চরম ক্ষুব্ধ এবং সন্দেহ প্রকাশ করছেন। এখন তাদের আশা ভরসার স্থল সিবিআই এর তদন্তই। সিবিআই তদন্তে কী এই ঘটনায় কেঁচো খুঁড়তে নতুন কোনও সাপ বেরোবে? শুধু আর জি করের প্রতিবাদীরাই নয়, রাজ্যের রাজনৈতিক মহলও সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে।

- Advertisement -
Business Desk
Business Desk
Stay informed about the latest business news and updates from Kolkata and West Bengal on Kolkata 24×7
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular