আরজি কর কান্ডে আমৃত্যু কারাদন্ড দেওয়া হল সঞ্জয় রায়কে৷ আরজি কর মামলায় আজ গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা হল। বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। মামলার শুনানিতে বিচারক বলেন, ‘‘আপনাকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে।’’ এই রায়টি তিলোত্তমার পরিবারে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে, যদিও তারা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তি চেয়েছিল। তবে, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত তার প্রতি ন্যায্য শাস্তি প্রদান করেছে।
এদিন, বিচারক সঞ্জয় রায়কে ৬৪, ৬৬, এবং ১০৩ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন, তবে তিনি জানিয়ে দেন যে, এই ধরনের ঘটনা বিরল নয় এবং এজন্য সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সঞ্জয় রায় তার সমস্ত অপরাধ স্বীকার না করলেও, আদালত তার উপর চাপিয়ে দেওয়া অভিযোগগুলির ভিত্তিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
রায় ঘোষণার পর তিলোত্তমার পরিবারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও, তারা এখনও অভিযোগ করেছেন যে, শুধু সঞ্জয় রায় নয়, আরও অনেকেই এই ঘটনায় জড়িত ছিল। তিলোত্তমার বাবা-মা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছিলেন, তবে আদালত তাদের আর্জি মেনে নেয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে, রাজ্য সরকার তিলোত্তমার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এটি তিলোত্তমার পরিবারকে কিছুটা সান্ত্বনা দিলেও, তাদের যন্ত্রণা যে সহজে শেষ হবে না, তা স্পষ্ট।
এই মামলায় সঞ্জয়ের আইনজীবী অবশ্য তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেছিলেন যে, সঞ্জয়কে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত, কিন্তু আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেনি। বিচারক জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের অপরাধের গুরুত্ব এবং তার আচরণ অনুসারে, তার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডই যথেষ্ট। সঞ্জয়ের কট্টর পরিণতি দেখে, আইনজীবীও এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা ভাবতে পারেন।
এদিকে, তিলোত্তমার বাবা ও মা জানিয়েছেন, তারা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অন্যদেরও শাস্তি চেয়ে লড়াই চালিয়ে যাবেন। তাদের দাবি, অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ এখনও তার পদে বহাল রয়েছেন এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবের কাছে তার সুরক্ষা রয়েছে। তিলোত্তমার পরিবার মনে করে, রাজ্যের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সন্দীপ ঘোষকে রক্ষা করছে, যা সমাজের জন্য খুবই বিপজ্জনক।
এই মামলার রায়, শুধুমাত্র তিলোত্তমার পরিবারই নয়, পুরো সমাজের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে এসেছে। ধর্ষণ ও হত্যার মতো নৃশংস অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের আইন কঠোর হতে হবে, যাতে এমন অপরাধীরা কখনোই সমাজে ফিরে আসতে না পারে। তবে তিলোত্তমার পরিবার এই রায়ে সন্তুষ্ট নয়, তাদের লড়াই চলতেই থাকবে।