কলকাতা থেকে দেওঘর পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা

ভারতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে রক্সৌল-হলদিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে সম্পূর্ণ হলে কলকাতা, দেওঘর, পটনা এবং হলদিয়ার মধ্যে ভ্রমণ সময়…

Raxaul-Haldia Expressway

ভারতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে রক্সৌল-হলদিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে সম্পূর্ণ হলে কলকাতা, দেওঘর, পটনা এবং হলদিয়ার মধ্যে ভ্রমণ সময় ৩ ঘন্টার কমে আসবে। এটি শুধু যাত্রীদের জন্যই নয় পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের জন্যও বিশাল সুবিধা নিয়ে আসবে।

ভারত সরকারের ‘ভারতমালা প্রকল্প’-এর আওতায় এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হচ্ছে, যার লক্ষ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে উন্নত সংযোগ সৃষ্টি করা। এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে পণ্য পরিবহণ এবং যাত্রী চলাচলে সময়ের ব্যাপক সাশ্রয় হবে, যা দেশীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়ক হবে।

kolkata24x7-sports-News

   

এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণের বিস্তারিত:

এই এক্সপ্রেসওয়ে মোট ৭১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এবং এটি রক্সৌল (বিহার) থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে শেষ হবে। এই করিডরটি দেওঘর এবং জামতারা জেলা দিয়ে যাবে, যা কলকাতা ও হলদিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলির সঙ্গে সংযোগ বাড়াবে।

দেওঘরে এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৫ কিলোমিটার হবে, আর জামতারা জেলায় থাকবে ৫০ কিলোমিটার অংশ। এই রুটটি পূর্ব চম্পারণ, শেহোয়ার, সামস্তিপুর, বেগুসরাই জেলা পার করবে এবং গঙ্গা নদী অতিক্রম করবে নতুন সেতুর মাধ্যমে, যা সুর্যাগড়া থেকে মলয়পুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। এরপর এটি চিরায়ণ্ডি, কাটোরিয়া (বাঁকা), মোহনপুর (দেবগড়), নাগপুর, ঘোরামারা, সোনারায়তাহদি, পলোজোড়ি (জামতারা) হয়ে যাবে। জামতারা পার করার পর এক্সপ্রেসওয়ে কুন্ধিত, বলপুর, আড়মবাগ, রাজহাটি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা অতিক্রম করে হালদিয়া বন্দরে পৌঁছাবে।

প্রকল্পের অর্থ এবং সুবিধা:

এই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের খরচ প্রায় ৬০,০০০ কোটি টাকা হবে, যা এই অঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম রাস্তা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিরা দ্রুত তাদের পণ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠাতে পারবেন, ফলে তাদের পরিবহন খরচ কমবে এবং সাপ্লাই চেন আরও শক্তিশালী হবে। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে, কলকাতা ও হালদিয়া অঞ্চলের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে।

এছাড়াও এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ফলে পর্যটন ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দেওঘর এবং জামতারা শহরগুলি এখনো অনেকাংশে অবহেলিত হলেও, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

সংযোগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা: 

রক্সৌল-হলদিয়া এক্সপ্রেসওয়ে শুধু ভ্রমণ সহজ করবে না, বরং এটি বৃহত্তর অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি বাড়াতে সহায়ক হবে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের শিল্প এলাকাগুলির সঙ্গে সহজ সংযোগ তৈরি হওয়ার ফলে প্রক্রিয়া শিল্প, খনিজ শিল্প, এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলিতে দ্রুত বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। এটি সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং দ্রুতগতির ট্রান্সপোর্ট সংযোগ প্রতিষ্ঠায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।