রেশন দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়, ইডি হেফাজতে আরও তিন চালকল মালিক

রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলার জাল ক্রমেই শক্ত হতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) তার তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে এবং তদন্তের মাধ্যমে (Ration…

Ration Scam: ED Arrests Three Rice Mill Owners for Alleged Illegal Selling

short-samachar

রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলার জাল ক্রমেই শক্ত হতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) তার তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে এবং তদন্তের মাধ্যমে (Ration Scam) একের পর এক বড় নাম প্রকাশ পাচ্ছে। সম্প্রতি, এই দুর্নীতির (Ration Scam) সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন করে তিনজন চালকল মালিককে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। এই গ্রেপ্তারির মধ্যে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে উঠে এসেছে। তাঁর সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে তদন্ত আরও জটিল হয়ে উঠছে, কারণ শোনা যাচ্ছে, এই দুর্নীতি চক্রের মূল সূত্র জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

   

ইডি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার করা তিনজন চালকল মালিক বেআইনি উপায়ে রেশন সামগ্রী বিক্রি করতেন। তাঁদের চালকলের মাধ্যমে রেশন সামগ্রী (Ration Scam)  সঠিকভাবে বিতরণ না করে তা কালোবাজারে বিক্রি করা হতো, যা জনগণের জন্য এক বড় বিপদ ডেকে আনছিল। এই চক্রের মাধ্যমে বেশ কয়েক বছর ধরে রেশন সামগ্রী দুর্নীতির (Ration Scam) মাধ্যমে বাজারে পৌঁছানো হতো এবং মুনাফা লুটতেন অভিযুক্তরা। দীর্ঘ তদন্তের পর, ইডি একটি বড় তথ্য পাচ্ছে, যা মূলত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তিন চালকল মালিকের নাম উঠে আসে। এর ফলে তদন্তের গতি আরও দ্রুত হয়েছে এবং ইডি এখন ব্যাপকভাবে এই দুর্নীতি (Ration Scam) চক্রের দিকে মনোনিবেশ করেছে।

যতই সময় যাচ্ছে, ততই এই দুর্নীতির চিত্র আরও পরিষ্কার হচ্ছে। ইডি জানিয়েছে, ধৃত চালকল মালিকদের চালকল থেকে অনেক নথি উদ্ধার করা হয়েছে, যা রেশন সামগ্রী বিক্রির প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। তদন্তকারীরা সোমবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে, ইডি দপ্তরে এই তিনজনকে ডেকে পাঠান এবং গভীর রাত পর্যন্ত তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু যথাযথ উত্তর না পাওয়ায়, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এখন তাঁদের আদালতে পেশ করা হবে এবং ইডি তাদের হেফাজতে চাইবে।

এদিকে, এই রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান এবং তৃণমূল নেতা শংকর আঢ্য। জামিন পাওয়া এই ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে অভিযোগ থেকে মুক্ত হলেও, তদন্ত চলতে থাকায় সবার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও বারবার জামিনের আবেদন জানিয়েছেন, তবে এই মামলায় ইডি তাঁকে ‘রিং মাস্টার’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

পূর্ববর্তী শুনানিতে, ইডির আইনজীবী দাবি করেছেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই এই দুর্নীতির মূল পরিকল্পনাকারী এবং তার জামিন দিলে পুরো তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।’’ ইডি আশঙ্কা করছে, দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে চলে গেছে এবং এই দুর্নীতির পিছনে একজন বড় গেরুয়া হাত রয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে আরও অনেক তথ্য উন্মুক্ত হবে, যা গোটা দুর্নীতি চক্রের আসল চেহারা তুলে ধরবে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, এই দুর্নীতির ব্যাপ্তি কতোটা গভীর? কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত? শুধুমাত্র চালকল মালিকেরা কি এর পেছনে? নাকি রাজনৈতিক অঙ্গনের কিছু বড় ব্যক্তিরাও এর সঙ্গে জড়িত? তদন্তকারীরা আশা করছেন, ধৃতদের কাছ থেকে আরও তথ্য পেয়ে এই চক্রের পুরো রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবেন।

এখনই কিছু নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না, তবে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের জাল যে অনেক বিস্তৃত, তা স্পষ্ট। আর, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি যে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে, তা বলাই যায়। সমস্ত সন্দেহের মুঘল সম্রাট তিনি, এখন শুধু অপেক্ষা, আইন কি তাকে কোনো রূপে শাস্তি প্রদান করবে, নাকি সব কিছু অস্বীকার করে তিনি মুক্তি পাবেন।