কলকাতার (Kolkata) শ্মশানে (Crematorium) ইঁদুরের (Rat) উপদ্রব (infestation) এবং তার ফলে মৃতদেহ সৎকারে বাধা সৃষ্টি হওয়ার ঘটনা শহরবাসীর জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবার কাশীপুরের রামকৃষ্ণদেব মহাশ্মশানে (রতনবাবুর ঘাট) বৈদ্যুতিক চুল্লির (electric chullee) তার কেটে দিয়েছে ইঁদুর, যার কারণে সেদিন শবদাহের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শ্মশানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় দিনের পর দিন মৃতদেহ সৎকারে সমস্যা দেখা দেয়। পুরসভা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও ইঁদুরের আক্রমণ শ্মশানে নতুন সমস্যা তৈরি করেছে।
পুরসভার স্বাস্থ্য ও আলো বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, শ্মশানের আশপাশে বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন খই, কলা, আতপ চাল, তিল ইত্যাদি ছড়িয়ে থাকা কারণে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। এর ফলে শ্মশানে বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এবং সৎকারের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শ্মশানে ইঁদুরের উপস্থিতি শুধু মৃতদেহ সৎকারের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করছে না, বরং শহরের অন্য স্থানে সেতু ও রাস্তার ক্ষতি হওয়ার ঘটনাও আগেই শোনা গেছে।
এ বিষয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, “ইঁদুরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় শ্মশানের কাজ চালানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি এই সমস্যা সমাধান না করা যায়, তাহলে শহর জুড়ে মৃতদেহ সৎকারে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।”
এছাড়া, বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছেন যে ইঁদুরের উপদ্রব শুধু শ্মশান বা সেতুর জন্য নয়, বরং শহরের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি ও বাসস্থানের জন্যও বিপজ্জনক হতে পারে। সাপের উপদ্রবের সময়ও বিশেষজ্ঞরা ইঁদুরের উপস্থিতির দিকে আঙুল তুলেছিলেন, কারণ সাপের খাদ্য হিসেবে ইঁদুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
এদিকে, পুরসভার পক্ষ থেকে ইঁদুর দমন করতে কাচের গুঁড়ো ছড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল, কিন্তু পশুপ্রেমীদের প্রতিরোধের কারণে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এই পরিস্থিতি শহরের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে শ্মশান, সেতু, রাস্তা, বাড়ি—সব জায়গাতেই ইঁদুরের উপদ্রব এবং তার ফলে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পুরসভা ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পরিকল্পনা করছেন, তবে বিষয়টি অত্যন্ত জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং। শ্মশানে ইঁদুরের উপদ্রবের মতো পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়লে, তা শহরের পরিষেবাগুলোর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।