রামনবমীর (Ram Navami) দিন ভারতের রাজনীতির একটি বিশেষ মুহূর্ত, কারণ এই দিনে একদিকে যেমন রামের জন্মের উৎসব পালন করা হয়, তেমনই এবারের রামনবমী বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে। গত কয়েক বছর ধরে রামনবমী (Ram Navami) উপলক্ষে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে থাকে, বিশেষ করে বিজেপির পক্ষ থেকে।
এবারের রামনবমীও (Ram Navami) তার ব্যতিক্রম নয়, কারণ বিজেপি তাদের প্রতিষ্ঠা দিবসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে চলেছে। আর এই সবকিছু একসঙ্গে ঘটতে চলেছে এমন একটি সময়ে যখন রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে বাড়ানো হয়েছে।
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছে। এর পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে পুলিশী নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রামনবমীর (Ram Navami) সময় যাতে কোনো রকম অশান্তি সৃষ্টি না হয়, সে জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা আগেভাগে নজরদারি শুরু করেছেন। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা নবান্ন থেকে এদিন দিনের পর দিন নজরদারি চালাচ্ছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, রাজ্যজুড়ে যেখানেই বড় মিছিল বের হবে, সেখানে পুলিশি পাহারা থাকবে, যাতে কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়ানো যায়।
এদিকে, রাজ্যে রাম নবমী (Ram Navami) উপলক্ষে মিছিলের অনুমতি নিয়ে কিছুদিন ধরে নানা ধরনের অশান্তি ও টানাপোড়েন চলছিল। কলকাতা হাইকোর্টের মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আদালত একাধিক নির্দেশনা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মিছিলে (Ram Navami) যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পথ চলাচলের ব্যাঘাত এড়ানো। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার এবং পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
একই দিনে বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসও রয়েছে, আর এই দুটি ঘটনা একসঙ্গে রাজ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে রামনবমীর (Ram Navami) দিন তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি সফল করতে বিক্ষোভ ও মিছিলের আয়োজন করা হতে পারে, যা একদিকে বিজেপির শক্তির প্রদর্শন হবে, অন্যদিকে এক ধরনের ধর্মীয় উত্সবের মতো হয়ে উঠবে। বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসের সঙ্গেও রাজ্যের পরিস্থিতি কিছুটা রাজনৈতিক রূপ নিতে পারে।
এদিকে, রাম নবমী (Ram Navami) উপলক্ষে বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বামেরা ঘোষণা করেছেন যে, রাম নবমীতে কোনও রকম অশান্তি রোধ করতে তারা রাস্তায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপস্থিত থাকবেন। তারা দিনভর রাস্তায় থাকার কথা বলেছেন এবং মিছিলগুলির প্রতি নজর রাখবেন। তাদের মতে, রাম নবমীকে (Ram Navami) কেন্দ্র করে যদি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তবে তাদেরও একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এই ঘটনাগুলির মাঝখানে রাজ্যের সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ি, রাজনৈতিক উত্তেজনা, এবং বিভিন্ন ধরনের সমাবেশ—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা অস্থির হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তবে, রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসন আশা করছে, যদি সবাই শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করেন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সম্মান করেন, তবে এই রাম নবমী যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণভাবে কাটবে।