প্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয়, বিধান ভবনে ভাংচুর করে বিজেপির একাংশ (Rakesh Singh)। রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের একাধিক নেতার ছবিতে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়। কংগ্রেস দাবি করে এই ভাংচুরের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। ঘটনার পর এন্টালি থানায় FIR হলে এতদিন রাকেশ সিংকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আজ তার ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে প্রায় ৩০ জনের একটি দল বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে বিধান ভবনে প্রবেশ করে। কংগ্রেস সূত্রে দাবি, ওই সময় কার্যালয়ে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মী ছিলেন এবং মূল গেট খোলা ছিল। হামলাকারীরা প্রথমে রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে-সহ কংগ্রেস নেতাদের ছবিতে কালি ছুঁড়ে দেয় এবং ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে।
এরপর তারা কার্যালয়ের বাইরে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এই ঘটনার সময় রাকেশ সিং সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই হামলার প্রতিবাদে কংগ্রেস এন্টালি থানায় এফআইআর দায়ের করে, যেখানে রাকেশ সিংয়ের নামে অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে রাকেশ সিং পলাতক। তাঁকে খুঁজতে পুলিশ তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায়, কিন্তু তিনি সেখানে পাওয়া যাননি। তদন্তে জানা যায়, হামলার সময় ব্যবহৃত একটি গাড়ি শিবম সিংয়ের নামে নথিভুক্ত।
এই সূত্র ধরে রবিবার রাতে পুলিশ শিবমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। তবে, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে সোমবার শিবম সিংকে গ্রেফতার করা হয়। শিবমের পরিবারের দাবি, তাঁকে পুলিশ হেফাজতে মারধর করা হয়েছে, যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। পুলিশ বলছে তারা রাকেশ সিংকে গ্রেফতার করবে, কিন্তু এখনও তিনি ধরা পড়েননি। আমরা দেখতে চাই, কোন শক্তি তাঁকে আড়াল করছে।”
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে বলেন, “বিধান ভবন থেকে এন্টালি থানার দূরত্ব মাত্র ১০০ মিটার, তবু পুলিশ সময়মতো পৌঁছতে পারেনি। এটি কি তৃণমূলের কার্যালয় হলে ঘটত?”
এদিকে, রাকেশ সিং একটি ভিডিও বার্তায় পুলিশকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, “আমার ছেলের কিছু হলে পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা দায়ী থাকবেন।” তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন।
তবে, বিজেপি নেতৃত্ব এই ঘটনায় রাকেশের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকায় আগুন লাগানো বা ভাঙচুরের ঘটনা বিজেপি সমর্থন করে না।”
এই ঘটনার পটভূমিতে বিহারে একটি সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের এক কর্মীর অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে এই হামলা চালানো হয় বলে বিজেপি দাবি করেছে। তবে, কংগ্রেসের অভিযোগ, এটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা, যার মাধ্যমে বিজেপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।
শুধুমাত্র ফোন ব্যবহার করে শুরু করুন ৫টি শূন্য বিনিয়োগের ব্যবসা
এই ঘটনায় এন্টালি থানায় দায়ের হওয়া এফআইআর-এর ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে, যারা রাকেশ সিংয়ের সহযোগী বলে দাবি করা হচ্ছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক প্রমাণ সংগ্রহ করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।