দুর্গাপুজো (Durga Puja) নিয়ে শুরু বিতর্ক। দুদিন আগেই নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে পুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়েছে সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এরই মাঝে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের। যা প্রধান বিচারপতি গ্রহণ করেছেন বলে খবর। বিচারপতি আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুত শুনানি হবে। শোনা যাচ্ছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্রবার হতে পারে মামলার শুনানি।
রাজ্য কোষাগারে হাঁড়ির হাল হলেও সর্বজনীন দুর্গা পুজো ক্লাবগুলিকে ৬০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদানের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এই বিপুল অনুদান নিয়ে বিভিন্ন মহলে শোরগোল পড়েছে। তীব্র সমালোচনার মুখে রাজ্য সরকার।
এই অনুদানের বিরুদ্ধে তবে প্রথম লিখিতভাবে প্রতিবাদে সরব হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক অ্যাসোসিয়েশন (Juta)। এই শিক্ষক সংগঠনের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে ৪৩ হাজার পূজা কমিটিকে ৬০ হাজার করে আনুমানিক ২৫৮ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে দেবে এবং তার সঙ্গে বিদ্যুতের বিলের ছাড়। সকলেই বুঝবেন, সরকার এই সমস্ত টাকাই দিচ্ছে সাধারণ মানুষের কর থেকে প্রাপ্ত টাকা থেকে।
জুটার আরও অভিযোগ একদিকে কোভিড এর পরে জনজীবনের নানা দুর্ভোগ, নিত্যপ্রয়োধনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া, কাজ হারানোর জন্য সাধারণ গরিব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন দুর্বিষহ, অন্য দিকে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ এই সরকার পূজা কমিটিগুলির হাতে তুলে দিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
শিক্ষক সংগঠনটির সাফ মন্তব্য, একদিকে মেধাবী ছাত্ররা তাদের ন্যায্য চাকরির দাবিতে রাস্তায় ঝড় জল উপেক্ষা করে মাসের পর মাস অবস্থান করছে অন্যদিকে ১ লা সেপ্টেম্বর উৎসবের ডাক দেওয়া হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়াশুনা, অফিস এর কাজ শিকেয় তুলে। একদিকে সাধারণ মানুষ তাদের ন্যায্য দাবিতে হরতালের ডাক দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকার তার সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ে তা বানচাল করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে, আবার একই সঙ্গে বিভিন্ন অছিলায় বাড়িয়ে চলেছে লাগামছাড়া ছুটি সরকারি চাকুরীজীবি, শিক্ষকদের ন্যায্য ডিএ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, অন্য দিকে সাধারণের করের টাকায় উৎসব পালন করা হচ্ছে।
সংগঠনের তরফে বার্তা, ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে সরকারের এই বিশেষ অনুদান পদক্ষেপে শিক্ষাঙ্গনের সদস্য হিসেবে আমরা বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ। আমরা চাই অবিলম্বে জনসাধারণের টাকার এই “মহোৎসব” বন্ধ হোক, সাধারণ চাকুরিপ্রার্থী, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানের দিকে নজর দিক সরকার।
শুধুমাত্র শিক্ষক সংগঠন নয়, একাধিক সরকারি কর্মচারী সংগঠনের তরফে সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এমনকি টিপ্পনি করতে ছাড়েনি তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠন।