এই শীতের মরসুমে ভারতের বাজারে পেঁয়াজ নয়, বরং আলুর দাম (Vegetable price) ঊর্ধ্বমুখী হওয়া নিয়ে বেশ চিন্তা বাড়ছে। একদিকে যেমন পেঁয়াজ ও টমেটোর দাম (Vegetable price) গত এক মাসে কিছুটা কমেছে, অন্যদিকে আলুর দাম হু হু করে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে, ডিসেম্বর মাসে আলুর দাম(Vegetable price) পৌঁছেছে প্রতি কেজি ৩৭.৫৯ টাকা, যা কৃষি খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই দাম (Vegetable price)বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। ভারতীয় বাজারে আলুর দাম (Vegetable price) বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো পশ্চিমবঙ্গের কিছু অঞ্চলে অকাল বৃষ্টির কারণে আলুর চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকদের জন্য এই বিপর্যয় অত্যন্ত কঠিন সময় এনে দিয়েছে, কারণ ফলন কম হওয়ার কারণে সরবরাহও কমেছে। ফলস্বরূপ, বাজারে আলুর দাম(Vegetable price) বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে, ভারতের খুচরা মুদ্রাস্ফীতি (Retail Inflation) নভেম্বরে কিছুটা কমে ৫.৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে, অক্টোবর মাসে যা ছিল ৬.২১ শতাংশ, তবে তা মূলত কিছু খাদ্যদ্রব্যের দাম কমার কারণে। এর মধ্যে পেঁয়াজ এবং টমেটোর দাম কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, আলুর দাম কিছুটা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মাসে যেখানে দাম বেশী ছিল, ডিসেম্বর মাসে তা আরও এক ধাপ বেড়ে যায়। যদিও এর পাশাপাশি কিছু ভোজ্য তেলের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে, যা উপভোক্তাদের জন্য নতুন চাপ তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমানে আলুর দাম বৃদ্ধির কারণ শুধু খারাপ আবহাওয়া নয়, বরং কৃষির মৌসুমী প্রভাবও। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে খরিফ মৌসুমে শাকসবজি বাজারে প্রবাহিত হতে শুরু করে এবং এতে দাম কিছুটা কমে যায়। তবে গত বছর শাকসবজির দাম মৌসুমী পতনের ঊর্ধ্বে ছিল, যা আগামী সপ্তাহগুলোতে কিছুটা সহজ হতে পারে।
আলুর দাম বৃদ্ধির পেছনে আরও একটি কারণ হচ্ছে সরবরাহের ঘাটতি। যেখানে সারা দেশে আলুর চাহিদা বেড়ে গেছে, সেখানে উৎপাদনও কম হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের কিছু অঞ্চলে অকাল বৃষ্টির ফলে আলুর ক্ষতি হয়েছে এবং অন্যদিকে, সঠিক সময় মত উৎপাদন না হওয়ায় বাজারে সরবরাহের অভাব সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও আলুর দাম বেড়েছে, তবে পেঁয়াজ ও টমেটোর দাম গত এক মাসে কিছুটা কমেছে, যা সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। পেঁয়াজের দাম কিছুদিন আগেও আকাশ ছোঁয়া ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা কিছুটা কমে এসেছে। তেমনি, টমেটোর দামও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু ভোজ্য তেলের দাম বাড়তে থাকায় ভোক্তাদের জন্য আবারও নতুন চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
ক্রিসিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, শীতকালীন শাকসবজির দাম সাধারণত ডিসেম্বর মাসে কমতে শুরু করে, কারণ খরিফ ফসল বাজারে আসতে শুরু করে। এর ফলে কিছু খাদ্যদ্রব্যের দাম কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, এক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ হবে ভোজ্য তেলের দাম, যেটি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে ভারতের খুচরা মুদ্রাস্ফীতির ওপর চাপ বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী সপ্তাহগুলোতে ভোজ্য তেল এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দাম কিছুটা কমতে পারে, তবে আলুর দাম যে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তা দীর্ঘমেয়াদে মানুষের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গে আলুর উৎপাদনে যদি কোনো রকম উন্নতি ঘটে এবং আবহাওয়া অনুকূল থাকে, তবে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে। এছাড়া কৃষি বিভাগের তরফ থেকে যদি কোনও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তবে আগামী মাসগুলোতে এই দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতে পারে।
সামগ্রিকভাবে, ভারতীয় বাজারে শীতকালীন শাকসবজির দাম কিছুটা কমতে পারে, তবে আলু এবং ভোজ্য তেলের দাম বাড়তে থাকলে, দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যেতে পারে। আশা করা যাচ্ছে, সরকারের পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে।