কলকাতায় আড়াই ঘণ্টা, দমদম সভায় শক্তি প্রদর্শন মোদীর

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ময়দানে সরব হতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM  Narendra Modi)। আগামীকাল, অর্থাৎ ২২ অগাস্ট ২০২৫ তিনি…

Modi Government to Table Bill for Removal Chief Minister

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ময়দানে সরব হতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM  Narendra Modi)। আগামীকাল, অর্থাৎ ২২ অগাস্ট ২০২৫ তিনি কলকাতায় পা রাখবেন। তবে এবারের সফর বেশ সংক্ষিপ্ত—মাত্র আড়াই ঘণ্টার জন্য শহরে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই অল্প সময়ের মধ্যেই একদিকে যেমন সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, অন্যদিকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও যোগ দেবেন তিনি।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, মোদী বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ বিমানে পাটনা থেকে কলকাতায় নামবেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি সড়কপথে যাবেন যশোর রোড মেট্রো স্টেশনে। সেখানেই উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো প্রকল্প-সহ কয়েকটি পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে যশোর রোড থেকেই মেট্রোতে চেপে বিমানবন্দর যাত্রা করার কথা তাঁর। প্রতীকী এই সফরের মাধ্যমে মোদী বার্তা দিতে চান—বাংলার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বদ্ধপরিকর।

   

মেট্রো উদ্বোধনের পর বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন দমদম সেন্ট্রাল জেল ময়দানে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে। এখানেই অনুষ্ঠিত হবে বিজেপির ‘পরিবর্তন সংকল্প যাত্রা’। প্রায় ৪৫ মিনিটের এই রাজনৈতিক সভায় মোদি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করবেন বলে রাজনৈতিক মহলের জল্পনা। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার কিংবা দুর্গাপুরের আগের সভাগুলিতে যেমন তিনি কর্মসংস্থান, দুর্নীতি, নারী সুরক্ষার বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন, তেমনি কলকাতার এই সভায়ও সেই সুরই বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মোদী এবারও বাংলার শাসকদলের একাধিক দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে সরাসরি তৃণমূলকে নিশানা করবেন। সম্প্রতি দুর্গাপুরের সভা থেকে তিনি হাসপাতালের নিরাপত্তা ঘাটতি এবং কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে রাজ্যের নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কলকাতার সভাতেও তিনি সেই প্রসঙ্গ টেনে আনতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বারবারই বাংলায় ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’ গঠনের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূলের আমলে উন্নয়ন থমকে আছে। বাংলাকে নতুন দিশা দেখাতে বিজেপির সরকারই একমাত্র বিকল্প। এবার দমদমের সভা থেকে তিনি সেই বার্তাকেই আরও জোরালোভাবে কর্মী-সমর্থকদের সামনে রাখতে পারেন।

Advertisements

যদিও মোদীর এই সফর খুবই সংক্ষিপ্ত—মোটে আড়াই ঘণ্টা, তবুও রাজনৈতিক তাৎপর্য বিরাট। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা ছাড়াও সংলগ্ন জেলাগুলির বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের কাছে মোদির উপস্থিতি বড় প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সফরকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে যে উত্তাপ ছড়াবে, তা বলাই বাহুল্য।

তবে স্থানীয় পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচিতে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলেও সূত্রের খবর। তবুও নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, মেট্রো উদ্বোধন ও দমদমে রাজনৈতিক সভা—এই দুটি কর্মসূচিই রয়েছে মোদীর তালিকায়।

সব মিলিয়ে, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফরকে ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তুমুল কৌতূহল। তৃণমূলকে নিশানা করে তিনি কী বার্তা দেন, আর বিজেপির নির্বাচনী রণকৌশলে কী নতুন মোড় আসে—সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।