অপেক্ষার অবসান, কলকাতায় মোদী

কলকাতা: শুক্রবার বিকেলেই নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে নামেন এবং সেখান থেকে সরাসরি শহরের অন্যতম প্রতীক্ষিত অবকাঠামোগত প্রকল্প—মেট্রোর নতুন রুট উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে…

Modi Government to Table Bill for Removal Chief Minister

কলকাতা: শুক্রবার বিকেলেই নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে নামেন এবং সেখান থেকে সরাসরি শহরের অন্যতম প্রতীক্ষিত অবকাঠামোগত প্রকল্প—মেট্রোর নতুন রুট উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে এই মেট্রো রুট চালু হতে চলেছে, যা শহরবাসীর যাতায়াতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। একই সঙ্গে ইতিমধ্যেই চালু থাকা দু’টি রুটের সম্প্রসারণ প্রকল্পের উদ্বোধনও প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েই হবে।

কলকাতার যাতায়াত সমস্যার অন্যতম সমাধান হিসেবে ধরা হচ্ছে এই নতুন মেট্রো রুটকে। শহরের ব্যস্ততম এলাকা ধরে চলবে এই রুট, যা প্রতিদিন হাজার হাজার অফিসযাত্রী, ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মানুষকে আরামদায়ক ও দ্রুতগতির পরিবহণ সুবিধা দেবে। জানা গিয়েছে, এই রুটের উদ্বোধনের ফলে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে সংযোগ আরও মজবুত হবে এবং সময় বাঁচবে প্রায় অর্ধেক।

   

শুধু নতুন রুটই নয়, দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যমান মেট্রো করিডরের সম্প্রসারণও আজ থেকে কার্যকর হতে চলেছে। এর ফলে শহরের প্রান্তিক অঞ্চলগুলি থেকেও মানুষ সরাসরি মেট্রো পরিষেবার সুবিধা পাবেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে যানজট অনেকাংশে কমবে এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বড় ভূমিকা নেবে মেট্রো।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলেও চর্চা তুঙ্গে। লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় পদ্মশিবিরকে শক্তিশালী করতে নরেন্দ্র মোদীর এই সফরকে প্রতীকী হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত, অবকাঠামো উন্নয়নকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। অন্যদিকে, শাসক তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ তুলছে যে এই প্রকল্পগুলির অধিকাংশই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল এবং কেন্দ্র কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করছে।

Advertisements

অন্যদিকে, সাধারণ মানুষ এই নতুন রুট উদ্বোধনকে স্বাগত জানিয়েছেন। অফিসযাত্রীদের বক্তব্য, এতদিন ধরে প্রতিদিন দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে মূল্যবান সময় নষ্ট হত। এখন মেট্রো চালু হলে অনেকটা স্বস্তি মিলবে। বিশেষত সেক্টর ফাইভ, সল্টলেক, ধর্মতলা ও শিয়ালদহের মতো কর্মসংস্থান ও শিক্ষা কেন্দ্রগুলির সঙ্গে সংযোগ বাড়ায় শহরের অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দমদম বিমানবন্দর থেকে অনুষ্ঠানস্থল পর্যন্ত সর্বত্র নজরদারির জন্য মোতায়েন করা হয়েছে এনএসজি, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের বিশেষ টিম। মেট্রো স্টেশন ও ট্রেনগুলিতেও নজরদারি চালু রাখা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফর নিছক একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নয়, বরং শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। নতুন মেট্রো রুট ও সম্প্রসারণ প্রকল্প চালু হওয়ায় শুধু যাতায়াতই সহজ হবে না, বরং শহরের অর্থনীতি ও পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যদিও রাজনৈতিক তরজায় এই সফরের তাৎপর্য ভিন্নভাবে দেখা হচ্ছে, তবুও সাধারণ নাগরিকদের কাছে আজকের দিনটি নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক।