‘নবান্ন অভিযান’ বনাম ‘জনস্বার্থ’! আইনি লড়াইয়ের পথে পরিবেশকর্মী

গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও কিছু অরাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে আয়োজিত হচ্ছে ‘নবান্ন অভিযান’। মূলত সরকারি নীতির প্রতিবাদ জানাতেই এই ধরনের…

PIL Likely in Calcutta HC Against Protest Marches Towards Nabanna

গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও কিছু অরাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে আয়োজিত হচ্ছে ‘নবান্ন অভিযান’। মূলত সরকারি নীতির প্রতিবাদ জানাতেই এই ধরনের অভিযান (Nabanna) কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে এই অভিযানের ফলে হাওড়া শহর এবং সংলগ্ন এলাকা প্রায়শই অচল হয়ে পড়ছে। রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, অফিসগামী মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের চরম সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, জরুরি পরিষেবাও প্রভাবিত হচ্ছে(Nabanna) 

এই পরিস্থিতিতে এবার জনস্বার্থ রক্ষার তাগিদে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন পরিবেশ কর্মী ও হাওড়ার বাসিন্দা সুভাষ দত্ত। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের লাগাতার (Nabanna) আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিশেষ করে হাওড়া শহরের নাগরিকরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন, কারণ নবান্ন হাওড়া জেলার মধ্যেই অবস্থিত। ফলে প্রতিবারই হাওড়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি ঘিরে পুলিশ ব্যারিকেড, বিশাল বাহিনী মোতায়েন এবং যান নিয়ন্ত্রণের কারণে গোটা শহর কার্যত থমকে যাচ্ছে।(Nabanna) 

   

সুভাষবাবুর যুক্তি, গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদ করার অধিকার সকলেরই আছে। কিন্তু সেই অধিকার পালনের জন্য যদি হাজার হাজার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়, তাহলে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারি দফতরের সামনে প্রতিবাদ করা এক কথা, আর জনজীবন স্তব্ধ করে আন্দোলন করা আরেক কথা। এমন কর্মকাণ্ডে নাগরিকদের স্বাধীন চলাফেরার অধিকার, কাজের অধিকার ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।(Nabanna) 

তিনি আরও বলেন, “প্রতিবার নবান্ন(Nabanna) অভিযানের দিন হাওড়া (Nabanna) স্টেশন থেকে শুরু করে সাঁতরাগাছি, শিবপুর, দোমজুড়, বেলিলিয়াস রোডের মতো বহু এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বহু রিকশাচালক, অটোচালক, ট্যাক্সিচালক রোজগার হারান। হাসপাতালে পৌঁছাতে সমস্যা হয় রোগীদের। এটা চলতে পারে না।”

Advertisements

এইসব কারণে তিনি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করতে চলেছেন, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের জনজীবন বিঘ্নকারী আন্দোলনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যায়। মামলার মূল দাবি, যেসব প্রতিবাদ বা অভিযানের ফলে জনসাধারণের চলাচল, কাজকর্ম, শিক্ষা এবং জরুরি পরিষেবার ওপর প্রভাব পড়ে, সেই ধরনের কর্মসূচির অনুমতি দেওয়ার আগে কড়া নজরদারি ও নীতিমালা প্রয়োগ করা হোক। এছাড়াও, বিকল্প স্থান বা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রতিবাদ করার ব্যবস্থা নিয়েও আদালত ভাবনা-চিন্তা করুক — এমনই আবেদন জানানো হবে।(Nabanna) 

এর আগেও সুভাষ দত্ত বহুবার পরিবেশ ও জনস্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা করেছেন এবং তাতে সাফল্যও পেয়েছেন। তাঁর উদ্যোগেই কলকাতার দূষণ নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে এবার তাঁর এই পদক্ষেপও আদালতের নজরে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।(Nabanna) 

নবান্ন অভিযান বন্ধ হোক কি না — সেই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক নয়, বিচার ব্যবস্থার। কিন্তু নাগরিক জীবনের স্বার্থে যদি এই আন্দোলনগুলির নিয়ন্ত্রণে কিছু নির্দেশ জারি হয়, তাহলে উপকৃত হবেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ — এমনটাই আশা করছেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত।