পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জামিন দিতে রাজি নয় ইডি, সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি বুধবার

শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) দীর্ঘদিন ধরে ইডি-র হেফাজতে রয়েছেন। গত কয়েক মাসে তিনি জামিনের (Bail) জন্য সুপ্রিম কোর্টের (Supreme…

3. Bail for Ex-Education Minister Partha Chatterjee in School Recruitment Scam

শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) দীর্ঘদিন ধরে ইডি-র হেফাজতে রয়েছেন। গত কয়েক মাসে তিনি জামিনের (Bail) জন্য সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর জামিনের জন্য সওয়াল করেছেন দেশের খ্যাতনামা আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তিনি আদালতে যুক্তি দিয়েছেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে কোনও অর্থ উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়া, যারা অন্যদের থেকে অর্থ উদ্ধার করেছেন, তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে। মুকুল রোহতগি আরও বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বয়স এবং শারীরিক অবস্থাও একে জামিন পাওয়ার পক্ষে একটি যুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তিনি আরও বলেন, ট্রায়াল এখনও শুরু হয়নি এবং কবে শুরু হবে তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই, ফলে একজন অভিযুক্তকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্দি রাখা যুক্তিসঙ্গত নয়।

তবে ইডি জামিনের আবেদনটির বিরোধিতা করেছে। ইডির বক্তব্য, জামিন দিলে মামলার তদন্তে বাধা সৃষ্টি হতে পারে এবং প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন দিলে তিনি সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন বলে মনে করছে ইডি। তাদের দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও মামলার তদন্তের মধ্যে রয়েছেন এবং তাঁর জামিন দেওয়া হলে তা মামলার প্রক্রিয়াকে বিপথগামী করতে পারে।

   

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী সিবিআই ও ইডি কর্তৃক গ্রেপ্তার এবং হাজতবাস সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা দেন। বিচারপতি সূর্যকান্ত আদালতে মন্তব্য করেন, এই তথ্য খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং আগামী বুধবার (wednesday) পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, কলকাতা হাইকোর্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের বিষয়ে আলোচনার আগেই একটি নতুন বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় জামিনের বিষয়ে একমত হতে পারেননি। একপক্ষ জামিন মঞ্জুর করলেও অন্যপক্ষের আপত্তি ছিল। এর ফলে, নতুন বেঞ্চ গঠন করে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে।

২০১৮ সালে কলকাতার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শুরু হওয়ার পর ২০২২ সালে গ্রেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি মামলার অভিযোগ রয়েছে, যেখানে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নিয়োগ দুর্নীতি ও দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার দাবি করা হয়েছে। তাঁর গ্রেপ্তারের পর তৃণমূল কংগ্রেসে অগ্নিপরীক্ষার মুখে পড়েন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দলের মহাসচিব পদ থেকেও অপসারিত করা হয়।

Advertisements

এদিকে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা জামিন পেয়েছেন, কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন নিয়ে এখনও শেষ সিদ্ধান্ত আসেনি। তাঁকে জামিন দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বর্তমানে, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। আগামী বুধবার সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানিতে জানিয়ে দেওয়া হতে পারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভবিষ্যত সিদ্ধান্ত, যা এই মামলার পরবর্তী পর্যায়ের দিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসবে।