দু-শতাধিক ট্রেন বাতিল! স্তব্ধ খড়গপুর শাখা, যাত্রীদের ক্ষোভে উত্তাল হাওড়া স্টেশন

South Eastern Railway: সাঁতরাগাছি স্টেশনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ পূর্ব রেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে বড়সড় সিগন্যালিং বিপর্যয়ের জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন বহু যাত্রী। সোমবার সকাল থেকেই…

howrah station local train cancellations

South Eastern Railway: সাঁতরাগাছি স্টেশনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ পূর্ব রেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে বড়সড় সিগন্যালিং বিপর্যয়ের জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন বহু যাত্রী। সোমবার সকাল থেকেই সাঁতরাগাচি রেল ইয়ার্ডে ইন্টারলকিং সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে বিকল হয়ে যায়, যার জেরে সাঁতরাগাছি দিয়ে যাওয়া প্রায় সব ট্রেন মাঝপথেই থেমে যায়। লোকাল থেকে দূরপাল্লা—সব ধরনের ট্রেনই এই বিপর্যয়ের শিকার হয়। সিগন্যাল না মেলায় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি ব্যাহত হয়।

সাঁতরাগাছি স্টেশন দক্ষিণ পূর্ব রেলের অন্যতম ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ জংশন। হাওড়া এবং শালিমার স্টেশন থেকে রওনা হওয়া বহু ট্রেন এই রুট হয়ে যায়। ফলে এই সিগন্যালিং সমস্যার প্রভাব বহুদূর ছড়িয়ে পড়ে। সকাল থেকে বহু ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যাত্রীরা স্টেশনে আটকে পড়ে অস্বস্তিতে পড়েন। বিশেষ করে অফিসযাত্রী ও পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। অনেকেই ট্রেন না পেয়ে বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হন, কিন্তু ট্রেনের উপর নির্ভরশীল এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সেটা সহজ ছিল না।

   

সূত্রের খবর, কিছুদিন আগেই সাঁতরাগাছি রেল ইয়ার্ডে ইন্টারলকিং ব্যবস্থা সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন সেই ব্যবস্থাই হঠাৎ করে সম্পূর্ণরূপে বিকল হয়ে পড়ে। রেল আধিকারিকদের একাংশের মতে, এই ইন্টারলকিং ব্যবস্থা প্রযুক্তিগতভাবে খুবই জটিল এবং সামান্য ত্রুটির ফলেও গোটা সিস্টেম অচল হয়ে পড়তে পারে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ইন্টারলকিং সিস্টেম ছাড়া ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণভাবে অনিরাপদ। তাই যতক্ষণ না পুরোপুরি মেরামতি করা যাচ্ছে, ততক্ষণ পরিষেবা চালু করা সম্ভব নয়।”

রেল কর্তৃপক্ষের তরফে দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ টেকনিক্যাল দল গঠন করা হয়েছে। তারা ইয়ার্ডে গিয়ে ত্রুটির উৎস নির্ধারণের চেষ্টা করছে। তবে সিস্টেম পুরোপুরি বিকল হওয়ায় কাজ কতটা দ্রুত সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এত বড় প্রযুক্তিগত সংস্কারের পরেও যদি এরকম বিপর্যয় হয়, তবে তা আদৌ কতটা কার্যকরভাবে করা হয়েছিল।

Advertisements

যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ জমছে। সকাল থেকে হাওড়া, সাঁতরাগাছি, শালিমার স্টেশন চত্বরজুড়ে দেখা যায় চরম বিশৃঙ্খলা। অনেকে ক্ষোভে সোশ্যাল মিডিয়ায় রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, “এত বড় রুটে এরকম বিপর্যয় মানে রেলের অব্যবস্থার নগ্ন উদাহরণ।” আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “ইন্টারলকিং ব্যর্থ হলে বিকল্প ব্যবস্থা কি আগে থেকেই ভাবা উচিত ছিল না?”

এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে এদিন রাত পর্যন্ত পুরোপুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে।

সব মিলিয়ে, সাঁতরাগাছি সিগন্যালিং বিপর্যয় রেলের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির প্রশ্ন তো তুলেই দিল, সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের উপর এই ধরনের সমস্যা যে কীভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলে, তা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। আগামী দিনে রেল কতটা দ্রুত এবং স্থায়ী সমাধান নিয়ে আসতে পারে, এখন সেই দিকেই নজর সকলের।