‘ওপেন টয়লেট’ মুক্ত কলকাতা গড়ার পথে পুরসভা

কলকাতা শহরের ‘ওপেন টয়লেট’ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব টয়লেট শুধু পরিবেশই দূষিত করছে না, বিপজ্জনক পরিস্থিতিও…

KMC

কলকাতা শহরের ‘ওপেন টয়লেট’ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব টয়লেট শুধু পরিবেশই দূষিত করছে না, বিপজ্জনক পরিস্থিতিও তৈরি করছে। বিশেষ করে রাতে এসব টয়লেটের আশেপাশে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়, যা শহরের নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এ ছাড়া এসব টয়লেটে পানি ও আলো না থাকায় দুর্গন্ধ হয়, যা সবার অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন এই সমস্যা সমাধানে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। পুরসভার মাসিক সভায় তৃণমূল কাউন্সিলর এবং 12 নম্বর ওয়ার্ডের ডাক্তার মীনাক্ষী গঙ্গেরিপা ধায়া একটি প্রশ্ন তোলেন, “শহরের রাস্তায় খোলা পতিতালয়গুলিতে আলো এবং পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা কি সম্ভব?” তিনি বলেন, রাতের আঁধারে এসব টয়লেটের উপস্থিতি অপরাধ, যা আইন ভঙ্গ। ওই এলাকায় আলোর ব্যবস্থা করলে এ ধরনের সমস্যা অনেকাংশে কমবে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা থাকলে এসব টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

   

প্রাথমিক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের উত্তর বিভাগের প্রধান স্বপন সমাধার বলেন, “বর্তমানে কলকাতা শহরে হাজার হাজার উন্মুক্ত শৌচাগার রয়েছে, যা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে।” ইতিমধ্যে এই উদ্যোগের কাজ শুরু হয়েছে। স্বপন সমাধার আরও বলেন, মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের লক্ষ্য হল সহজে অ্যাক্সেসযোগ্য ক্যাসিনোর সংখ্যা বাড়ানো। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক সুবিধার দোকান খোলা হয়েছে এবং আরও কিছু এলাকায় নির্মাণ কাজ চলছে। এই প্রবেশযোগ্য টয়লেটগুলি শহরের বাসিন্দাদের সুবিধা নিশ্চিত করবে এবং পরিবেশের উন্নতি করবে।

কিন্তু কলকাতাকে ‘ওপেন টয়লেট’মুক্ত শহর করার পথে অনেক বাধা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা মাঠ এলাকা, যা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এই এলাকায় যেকোন স্থায়ী কাঠামো নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীর একটি ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ প্রয়োজন। তাই ময়দান, রেড রোড ও মে রোডের আশেপাশে খোলা পতিতালয়ের সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। পুরসভা এই বিষয়ে সেনাবাহিনীর সাথে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।

তদুপরি, কলকাতা শহরের যানজট এবং জনসংখ্যার চাপের কারণে, উপলব্ধ টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহজলভ্য শৌচাগার শুধু শহরের পরিবেশই উন্নত করবে না, মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যাও কমবে। এইভাবে, একদিকে, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন শহরের পরিবেশের উন্নতি করতে চায়, অন্যদিকে নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে চায়।

কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের এই উদ্যোগ একদিকে যেমন শহরের রাস্তাঘাট, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে, অন্যদিকে নাগরিকদের আরও স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল শহর গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি করবে।