শিক্ষা দিতে পারিনি! বিজয় দিবসে আক্ষেপের সুর বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের

এবারের বিজয় দিবসের (Victory Day) অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের (Liberation Fighters) মধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। যেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমাগত…

Bangladesh Victory Day

এবারের বিজয় দিবসের (Victory Day) অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের (Liberation Fighters) মধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। যেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমাগত অস্থির হয়ে উঠেছে, মুক্তিযোদ্ধারা একেবারেই অবাক নন যে, তাদের দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে গেছে। তাঁদের মতে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ ছিল, বর্তমান বাংলাদেশে (Bangladesh) সেই আদর্শের প্রতি যথেষ্ট সম্মান দেওয়া হচ্ছে না, এবং সেই জন্যই দেশের ভিতরে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “বাংলাদেশের (Bangladesh) জন্য স্বাধীনতার পরের বছরগুলো ছিল গর্বের এবং আশা জাগানো। কিন্তু এখন আমাদের মনে হয়, যেন আমরা নিজেরাই আমাদের ভবিষ্যৎকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারিনি। স্বাধীনতার চেতনা অনুযায়ী পরবর্তী প্রজন্মকে যদি আমরা সঠিকভাবে শিক্ষা (Teach) দিতে পারতাম, তাহলে হয়তো আজকের পরিস্থিতি আমরা দেখতে পেতাম না।”

   

তাঁরা মনে করেন, আওয়ামি লিগ সরকারের দীর্ঘ সময়ের শাসন বাংলাদেশের (Bangladesh) জন্য অনেক কিছু নিয়ে এসেছে, তবে একই সঙ্গে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংঘর্ষ বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অস্থির করেছে। যদিও এক মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেছেন যে, সরকার পরিবর্তনের পরেও বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় আছে এবং তেমন কোনো বড় বিপর্যয় হয়নি, তবুও সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মনে এক ধরনের আক্ষেপ ছিল যে, তাঁদের সংগ্রামের অর্জন আজকের বাংলাদেশে (Bangladesh) সঠিকভাবে মূল্যায়িত হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের চেতনা এবং মূল মূল্যবোধ আজকের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে মনে করেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। দেশের মূল সমস্যাগুলির মধ্যে গণতন্ত্র, সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধের প্রতি অবহেলা এবং অবহেলিত নেতৃত্বের কারণে তারা হতাশ।

তবে, যেহেতু ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের (Bangladesh) বিজয় দিবস, তাই মুক্তিযোদ্ধারা এই দিনটি উপলক্ষে কিছুটা গর্বিত হলেও, দেশের বর্তমান অবস্থাকে সামনে রেখে তারা কিছুটা উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। ভারতের ফোর্ট উইলিয়ামে যেভাবে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে কূটনীতিকরা, সেনা কর্মকর্তারা এবং মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত হন, এবারের অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। এই বিষয়টি নিয়ে নানা রকম আলোচনা শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের (Bangladesh) কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি নিয়ে অনেকেই মনে করছেন, এটি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতির ইঙ্গিত হতে পারে। একদিকে, যেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুবই গভীর, সেখানে অন্যদিকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, একদিকে বাংলাদেশের (Bangladesh)স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবোধ এবং স্বপ্নের কথা মনে রেখে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে, তবে অন্যদিকে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুরক্ষা এবং শক্তিশালী করতে হবে। তাই, তারা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের শিক্ষা এবং দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত মূল্য বোধকে পৌঁছানোর গুরুত্ব অনুভব করছেন।

অন্যদিকে, বিজয় দিবসের (Victory Day) অনুষ্ঠান এই দিনটিকে সেলিব্রেট করার জন্য একটি বড় সুযোগ দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের আসার মাধ্যমে ফোর্ট উইলিয়ামের অনুষ্ঠান একটি স্মরণীয় দিন হয়ে ওঠে। তবে, অন্যান্য বছরের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আয়োজনের অভাব এবারের অনুষ্ঠানে খুবই পরিষ্কার ছিল।

মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের দেশ, তাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সেই সংগ্রামের মর্মবাণী নিয়ে কিছুটা চিন্তা এবং কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বিশ্বাস করেন, যদি দেশটি সঠিকভাবে সবার অধিকার রক্ষা করতে পারে, দেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ এবং স্বাধীনতার মূল্যবোধ গড়ে তুলতে পারে, তাহলে তারা বাংলাদেশকে (Bangladesh) একটি আরও উন্নত এবং শক্তিশালী দেশ হিসেবে দেখতে পাবেন।