Election Commission: ভোটার তালিকায় নাম নিয়ে বিতর্ক, সামনে এল ‘ডগবাবু-কুত্তাবাবু’ নথি

বর্তমানে দেশের নানা প্রান্তে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যে ভাবে একের পর এক হেনস্থার ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগে তৃণমূল কংগ্রেস। দিল্লি, হরিয়ানা, গুজরাট-সহ একাধিক…

"Election Commission Starts Training for BLOs in West Bengal Ahead of 2026 Assembly Elections

বর্তমানে দেশের নানা প্রান্তে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যে ভাবে একের পর এক হেনস্থার ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগে তৃণমূল কংগ্রেস। দিল্লি, হরিয়ানা, গুজরাট-সহ একাধিক রাজ্যে বাংলা ভাষা বলার ‘অপরাধে’ শ্রমিকদের জেরা করা, আটকে রাখা বা নিগ্রহের অভিযোগ সামনে এসেছে। এতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বাঙালি পরিচয়, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রশ্ন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস সরব হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী প্রক্রিয়া (এসআইআর) নিয়েও কড়া অবস্থান নিয়েছে দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। তাঁর অভিযোগ, “এসআইআরের নামে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে, তাঁদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

   

তাঁর আরও দাবি, একদিকে সাধারণ মানুষের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে, অন্যদিকে কুকুরের নামে নথিভুক্ত করা হচ্ছে ভোটার আইডি। অভিষেক বলেন, “এই ভাবে যদি নির্বাচন কমিশন চলতে থাকে, তাহলে গণতন্ত্র আর বাঁচবে না। কোথাও একজনের নাম ডগবাবু, বাবার নাম কুত্তাবাবু, মায়ের নাম কুত্তিয়াদেবী— এই নামেই নথিভুক্ত হয়েছে আধার বা বাসিন্দা হিসাবে। কমিশন এ নিয়ে কোনও স্পষ্ট বক্তব্য রাখছে না।”

এই মন্তব্য সামনে আসতেই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। যদিও নির্বাচন কমিশনের তরফে পরে জানানো হয়, এই ধরনের কোনও ব্যক্তি বা নথি বাস্তবে নেই। কমিশনের বক্তব্য, এই তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।

কিন্তু তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী পাল্টা দাবি করেন, “যদি এটা মিথ্যা হয়, তাহলে কমিশন স্পষ্ট করে বলছে না কেন? বিহার সরকারের তরফে একজনের নামে ডিজিটাল বাসিন্দা সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে— যার নাম ডগবাবু, বাবার নাম কুত্তাবাবু, আর মায়ের নাম কুত্তিয়াদেবী। জেলায় পাটনা, পোস্ট অফিস ও পিনকোড-সহ সব তথ্য সেখানে দেওয়া আছে। এমন তথ্য যদি একেবারে জাল হয়, তাহলে সরকারের তরফে কেন সেই সার্টিফিকেট জারি করা হল?”

Advertisements

এই ইস্যু ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল রাজনৈতিক লড়াই তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এই বিষয়ে কটাক্ষ করে বলেন, “এসব করে কেউ ভোটে জিততে পারবে না। ওরা বুঝে গেছে, একবার ভোটার তালিকা সংশোধন হলেই তৃণমূলের সব হিসাব শেষ হয়ে যাবে। তাই মিথ্যে অভিযোগ তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ওরা এখন পাগলের মতো আচরণ করছে।”

তৃণমূলের বক্তব্য, কেন্দ্র এবং নির্বাচন কমিশন একযোগে বাঙালি ভোটারদের নিশানা করছে। অভিষেকের অভিযোগ, “এসআইআরের নামে বাংলায় বহু সংখ্যালঘু ও দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। অথচ অন্য রাজ্যে বাসিন্দা সার্টিফিকেটে ‘ডগবাবু’ নামেও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে! এই দ্বিচারিতা চলতে পারে না।”

এই বিতর্কের কেন্দ্রে আছে নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা। বিষয়টি এখন রাজনৈতিক শিবিরগুলির মধ্যে চাপানউতোরে সীমাবদ্ধ থাকলেও, এর প্রভাব ২০২৫ সালের ভোটের আগে কতদূর ছড়ায়, সেটাই দেখার।