গত বৃহস্পতিবার, আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার মা-বাবা দিল্লি সফর করেন এবং সিবিআই ডিরেক্টরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে, তাঁরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, যার কারণে নির্যাতিতার বাবার মধ্যে ক্ষোভ জমে উঠেছে। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, “আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ইমেল পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি সময়ের অভাবে দেখা করতে পারবেন না। যেখানে রাষ্ট্রপতির নিজে থেকে এগিয়ে আসা উচিত ছিল, সেখানে তিনি বলছেন, সময় নেই।”
এদিকে, দিল্লিতে সিবিআই সদর দফতরে সিবিআই প্রধান প্রবীন সুদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর, নির্যাতিতার বাবা আশ্বস্ত হন যে তাঁদের মেয়ে ন্যায্য বিচার পাবে। তবে তিনি বলেন, “আমরা কখনও সিবিআই তদন্তের দাবি করি নি। আদালত নিজেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। সাত মাস হয়ে গেল, কিন্তু আমাদের মেয়ে এখনও বিচার পায়নি। আমরা বিচারের জন্য সব দরজা খোলার চেষ্টা করেছি এবং লড়াই চালিয়ে যাব।” তিনি আরও জানান, “আগে সিবিআই চার্জশিট জমা দেয়নি, যার ফলে দুই অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যায়। আমি আদালতে নতুনভাবে আবেদন রেখেছি।” এদিকে, আরজি কর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত এবং সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ডের দাবি নিয়ে সিবিআই এখন উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। একই সঙ্গে, সিবিআই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট তৈরি করছে। সিবিআইয়ের এক কর্মকর্তার মতে, এই মামলার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং শিগগিরই আদালতে পেশ করা হবে।
এর আগে, সিবিআই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে। কিন্তু চার্জশিট সময়মতো জমা না হওয়ায়, তাঁরা জামিন পেয়েছেন। সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরজি কর কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র, তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং শীঘ্রই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। অন্যদিকে, সিবিআই জানায়, টালা থানার প্রাক্তন আইসির মোবাইল ফোনের সিম এখন আর ফেরত দেওয়া যাবে না, কারণ এতে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আরজি কর কাণ্ডের তদন্তে সিবিআই এবং আদালতের মধ্যে চলমান লড়াইয়ের মধ্যেই, নির্যাতিতার পরিবার আশাবাদী যে, শেষ পর্যন্ত ন্যায্য বিচার পাওয়া যাবে।