নিউটাউনের স্পা সেন্টারের আড়ালে মধুচক্র, আটক ১৭

নিউটাউন (Newtown), শহরের আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত হলেও, সেখানে চলছিল এমন এক দেহব্যবসার চক্র যা অবাক করে দেওয়ার মতো। নামী মলগুলোর পাশে, ঝকঝকে স্পা সেন্টারের…

Newtown spa center

নিউটাউন (Newtown), শহরের আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত হলেও, সেখানে চলছিল এমন এক দেহব্যবসার চক্র যা অবাক করে দেওয়ার মতো। নামী মলগুলোর পাশে, ঝকঝকে স্পা সেন্টারের (spa center) আড়ালে চালানো হচ্ছিল মধুচক্র (Honeycomb)। এই স্পা সেন্টারগুলো একদিকে যেমন যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষকে আকর্ষণ করছিল তাদের বিজ্ঞাপনে, অন্যদিকে তেমনই সেখানে চালানো হচ্ছিল অবৈধ দেহব্যবসা। শনিবার রাতে বিধাননগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ এই স্পা সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ১৭ জনকে আটক (arrested) করেছে, যাদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ এবং ১০ জন মহিলা রয়েছেন। অভিযানে উঠে এসেছে এক ভয়াবহ চিত্র, যা প্রশাসনের কাছে নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি করেছে।

নিউটাউনের বিভিন্ন জায়গায় এমনই স্পা সেন্টারগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে দেহব্যবসা চলছিল, কিন্তু কেন পুলিশের কাছে খবর পৌঁছাতে দেরি হল? এই প্রশ্নটি এখন জোরালোভাবে উঠছে। বিশেষ করে যখন স্পা সেন্টারের বিজ্ঞাপনগুলো রাস্তাঘাটে অতি স্পষ্টভাবে চোখে পড়ছে, তখন সাধারণ মানুষের কাছে এর আড়ালে কী চলছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। তবুও পুলিশ কীভাবে এতদিন এই কার্যকলাপকে নজরদারি থেকে বাইরে রাখল, সেটা খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

   

আগরতলায় দূতাবাসে হামলা, আজ ভারতীয় হাইকমিশনে ঢুকবে বেগম জিয়ার ভক্তরা

এদিকে, বিধাননগর পুলিশ যেসব স্পা সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল নিউটাউনের অ্যাক্সিস মলের স্পা সেন্টার। এই স্পা সেন্টারটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত ছিল তার অত্যাধুনিক এবং ঝকঝকে পরিবেশের জন্য, কিন্তু এর আড়ালে যে চলছে অবৈধ দেহব্যবসা, তা বুঝতে সাধারণ মানুষকেও অসুবিধা হয়নি। এই স্পা সেন্টারে বেশ কিছু সময় ধরে সন্দেহজনক কার্যকলাপ চলছিল, তবে এবার পুলিশি অভিযানে সেই চক্রের পেছনের আসল চিত্র সামনে চলে এসেছে।

বিজেপি নেত্রী বৈশালী ডালমিয়ার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা, গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্ক

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযান চলাকালীন ১৭ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১০ জন মহিলা এবং ৭ জন পুরুষ ছিল। যাদের মধ্যে ৭ জন কাস্টমার এবং ৩ জন মহিলা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, এই স্পা সেন্টারটি মূলত অবৈধ দেহব্যবসার জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছিল, এবং এটি চলছিল গোটা নিউটাউন জুড়ে বেশ কিছু দিন ধরে। আরও জানানো হয়েছে যে, এই চক্রে জড়িত একাধিক ব্যক্তির নামও পুলিশের কাছে পৌঁছেছে, যারা এই অবৈধ কার্যকলাপ পরিচালনা করছিল।

ধৃতদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের মতো কঠোর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি, যা পুরো চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। পুলিশের অনুসন্ধান এখনো চলছে, এবং ধৃতদের বারাসত আদালতে হাজির করা হবে সোমবার।

আবাস নিয়ে কড়া নবান্ন, পঞ্চায়েতে বিশেষ ক্যাম্প, গ্রাহকদের নথি যাচাইয়ের ব্যবস্থা

এদিকে, এই ঘটনার পর স্থানীয় সমাজে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এতদিন ধরে কেন পুলিশ এই ধরনের স্পা সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি? সাধারণ মানুষও এরই মধ্যে এই স্পা সেন্টারের পেছনের কার্যকলাপ নিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, পুলিশ জানতো এ বিষয়ে, তবে সম্ভবত বিভিন্ন কারণে সঠিক পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড চলতে থাকে।

এছাড়াও, এই অভিযানে নেমে পুলিশ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেয়ে আশাবাদী যে, তারা এই চক্রের মূল হোতাদের ধরতে সক্ষম হবে। পুলিশ জানায়, তারা এই ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যাতে ভবিষ্যতে আবার এমন কোনো অবৈধ কার্যকলাপ ঘটতে না পারে। স্পা সেন্টারগুলোর মাধ্যমে যে এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে থাকে, তার প্রতি প্রশাসনের তীব্র মনোযোগ এবং একগুঁয়ে পদক্ষেপ অপরিহার্য।

পশ্চিমী ঝঞ্ঝার মাঝে রাজ্যজুড়ে শীতের আমেজ, কলকাতায় কবে পড়বে জাঁকিয়ে শীত?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের কার্যকলাপ মূলত নগরের আধুনিকতার আড়ালে চলে এবং সমাজের একেবারে অন্ধকার দিক হিসেবে দেখা দেয়। কেবলমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, বরং স্থানীয় জনগণের সচেতনতা এবং সহযোগিতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড ক্ষতিকর, এবং এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম প্রয়োজন। 

ফের চড়ছে সবজির দাম, রবিবারেও আনাজে হাত দিতে ছ্যাঁকা মধ্যবিত্তের

এখন, বিধাননগর পুলিশ আশা করছে, আগামী দিনে এই ধরনের স্পা সেন্টারগুলোতে অভিযান চালিয়ে, দেহব্যবসার মতো অবৈধ কার্যকলাপ পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, স্পা বা মাসাজ পার্লারের নামের আড়ালে কোনো ধরনের অবৈধ কাজ চালানোর সুযোগ দেওয়া হবে না।