১ মিনিটের বেশি দাঁড়ালে জরিমানা,  বাসের জন্য নয়া গাইডলাইন রাজ্য সরকারের

রাজ্য সরকার শহরের কলকাতার (Kolkata)বাস (bus) চলাচলকে আরও সুশৃঙ্খল করার জন্য নতুন গাইডলাইন (New guidelines) প্রকাশ করেছে। এই গাইডলাইনের উদ্দেশ্য হলো, বাসের চলাচল নির্দিষ্ট নিয়মে…

Kolkata Bus Guidelines

রাজ্য সরকার শহরের কলকাতার (Kolkata)বাস (bus) চলাচলকে আরও সুশৃঙ্খল করার জন্য নতুন গাইডলাইন (New guidelines) প্রকাশ করেছে। এই গাইডলাইনের উদ্দেশ্য হলো, বাসের চলাচল নির্দিষ্ট নিয়মে চালানো এবং দুর্ঘটনা রোধ করা। গাইডলাইনে বাস চালক-কন্ডাক্টরের আচরণ, দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁদের করণীয়, এবং বাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, যাত্রী তোলার নাম করে বাস দীর্ঘক্ষণ স্টপেজে দাঁড়িয়ে রাখা যাবে না, এক মিনিটের বেশি দাঁড়ালে (standing) সেই বাসকে জরিমানা করা হবে।

নির্দেশিকাগুলিতে বেশ কয়েকটি নতুন নিয়ম যুক্ত করা হয়েছে, যা বাস চালক এবং কন্ডাক্টরদের পেশাদার দক্ষতা এবং তাদের নিরাপত্তা পদ্ধতিকে আরও উন্নত করবে। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিটি বাসে অবশ্যই একটি নিবন্ধিত অভিযোগ বাক্স থাকতে হবে, যেখানে যাত্রীরা পরিষেবা সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যা বা অভিযোগ তুলতে পারে। এর মাধ্যমে বাস মালিকরা বাস সার্ভিসের মান উন্নয়নে সহায়তা পাবেন।

   

বাসের চালক-কন্ডাক্টরের ইউনিফর্ম এবং প্রশিক্ষণ

চালক ও কন্ডাক্টরদের জন্য ইউনিফর্ম চালু করতে চায় রাজ্য পরিবহণ দফতর। এ ছাড়া কমিশন ব্যবস্থার বিকল্প কী হতে পারে তা নিয়ে মালিকদের ভাবতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের কোনো পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা বা অভিযোগ আছে কিনা তা মালিকদের পরীক্ষা করতে হবে। ফলে দুর্ঘটনা বা কোনো সমস্যা হলে চালক-কন্ডাক্টরের দায়িত্ব ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না।

এ ছাড়া চালক ও কন্ডাক্টরদের প্রতি তিন বছরে অন্তত ৭ থেকে ১৫ দিনের রিফ্রেশার কোর্স করতে বলা হয়েছে। এই কোর্সে তাদেরকে ট্রাফিক আইন, যাত্রীদের সাথে আচরণ, সড়ক নিরাপত্তা এবং দুর্ঘটনাজনিত পরিস্থিতিতে করণীয় শেখানো হবে। রিফ্রেশার কোর্স চালক ও কন্ডাক্টরদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের পেশাগত মান উন্নত করবে।

বাসের নিরাপত্তা এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধ

রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশিকা অনুসারে দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বাসে ফার্স্ট এইড বক্স রাখতে হবে, যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ড্রাইভার এবং কন্ডাক্টরের কী করা উচিত তা নির্দেশিকাগুলিতে বিশদভাবে বলা হয়েছে। ড্রাইভার-কন্ডাক্টরের প্রথম কাজ হবে পুলিশ বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো, যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

এছাড়া দুর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট চালক বা কন্ডাক্টরকে থানায় ফোন করে জানাতে হবে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। নতুন নিয়মের মাধ্যমে দুর্ঘটনা রোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে, যা শহরের সড়কে বাস চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

বাস ড্রাইভিং গতি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি ব্যবস্থাপনা

নির্দেশিকাতে আরও বলা হয়েছে যে বাস চালকদের জন্য একটি বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে বাসের গতি ট্র্যাক করা যাবে। বাস নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার আগে চালকরা অ্যাপে কিউআর কোড স্ক্যান করবেন, যার মাধ্যমে প্রশাসন বাসের গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারবে। বাসটি ওভারস্পিডে চললে তা প্রশাসনকে জানানো হবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফলে বেপরোয়া গাড়ি চালানো কমবে এবং দুর্ঘটনা রোধে সহায়ক হবে।

নিউ টেস্টামেন্টে মালিকের পরিচয়

এই নতুন নির্দেশিকা বাস্তবায়নে ব্যবসার মালিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চালক ও কন্ডাক্টরদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তাদের কাজে মনোনিবেশ করার জন্য মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগকর্তাদের তাদের কর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা প্রটোকল নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। নতুন নিয়মে বেপরোয়া বাস চালানো ও দুর্ঘটনা কমবে বলে জানিয়েছেন পরিবহণ বিভাগের কর্মকর্তারা।

এ ছাড়া বাস-মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, राहुल चय़य़य़पा ध्याय বলেন, আমরা সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে বিভিন্ন ক্যাম্পের আয়োজন করছি। এ ব্যাপারে আমরা সব সময় সরকারের পাশে থেকেছি এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে নিয়োজিত আছি।

বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির বিবৃতি

বাস মিনিস্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ণ বসু বলেন, “আমরা যতটা সম্ভব ড্রাইভার এবং কন্ডাক্টরদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করব।” বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে, এই নিয়মের মাধ্যমে আমরা তা করতে পারব।

নতুন নির্দেশিকা কার্যকর হলে, রাজ্য বাস পরিষেবা আরও অ্যাক্সেসযোগ্য হয়ে উঠবে এবং যাত্রীদের জন্য নিরাপদ ভ্রমণের পরিবেশ তৈরি হবে। চালক ও কন্ডাক্টররা যদি এই নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে পালন করেন, তাহলে আশা করা যায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।