‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ যখন অন্য থিয়েটারের

সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়: রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট (Romeo & Juliet) যেমন একটি চিরন্তন প্রেমের গল্প ঠিকই তেমনই আবার এই কাহিনী ঘিরে রয়েছে শত্রুতা ও হিংসা৷ রোমিও এবং…

New Experiment Brings Romeo & Juliet to Bengali Stage

সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়: রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট (Romeo & Juliet) যেমন একটি চিরন্তন প্রেমের গল্প ঠিকই তেমনই আবার এই কাহিনী ঘিরে রয়েছে শত্রুতা ও হিংসা৷ রোমিও এবং জুলিয়েটের প্রেম কাহিনীর একটি সুন্দর সমাপ্তি হতে পারত কিন্তু তা হতে পারেনি পারিবারিক কলহের কারণে৷ সে যুগে কিংবা এ যুগে বলে নয় সব সময়ই দুই যুবক-যুবতী প্রেম করলে তা তাদের পরিবার (অথবা বৃহত্তর অর্থে দুজনের ধর্ম, বর্ণ, দেশ, সমাজ) সাদরে গ্রহণ করবেই এমন তো নয় বরং বহু ক্ষেত্রেই তা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই বাধার চরম পরিণতি হত্যাকান্ড৷ চোখ মেললেই তো রোমিও জুলিয়েটের গল্প আজকের প্রেক্ষাপটে বাংলা তথা ভারত তথা গোটা বিশ্বজুড়ে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে৷ ব্যক্তিগত সম্পর্ক, রোমান্স এবং স্বপ্নকে আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় কারণে বার বার বলি দেওয়ার ঘটনা উঠে আসছে সংবাদের শীরোনামে৷

   

তবু এত কিছু পরেও মানুষ প্রেম করে সেটাই হয়তো জীবনের সার্থকতা৷ তাই হয়তো শেক্সপিয়ারের এই চিরন্তন ট্র্যাজিক প্রেমের কাহিনী মঞ্চে ফিরে ফিরে আসে৷ নতুন নতুন চিন্তাধারায় চলে নাটকটি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা৷

New Experiment Brings Romeo & Juliet to Bengali Stage

সম্প্রতি অন্য থিয়েটারের প্রযোজনায় ফের দেখা গেল ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’। সম্পাদনা ও নির্দেশনা অবন্তী চক্রবর্তী৷ নতুন মঞ্চস্থ নাটকটিতে শেক্সপিয়ারের রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েটের পাশাপাশি চেক ঔপন্যাসিক জ্যান ওটসেনাসেকের রোমিও, জুলিয়েট অ্যান্ড ডার্কনেসকেও ব্যবহার করা হয়েছে৷এইভাবে প্রয়োগে ভাষান্তর দেবেশ রায়ের৷এরফলে নাটকে মধ্যযুগের ভেরোনা শহর জড়িয়ে গিয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাগ শহরের সঙ্গে৷ নাচ গান প্রেমিকযুগলের স্বপ্ন, বাঁচার আর্তি ডুয়েল লড়াই থেকে বিয়োগান্ত পরিণতির পাশাপাশি ফ্যাসিস্ট নাৎসি জার্মানির ভয়াবহ অত্যাচারে নিষিদ্ধ প্রেমের চরম পরিণতি কোথায় যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। নতুন আঙ্গিকে দুই সময়কে দক্ষতার সঙ্গে বোনার চেষ্টা হয়েছে গোটা নাটকে যাতে নির্দেশককে সঙ্গত করেছেন নাটকের কুশীলবেরা।

এই নাটকে নেই তেমন কোনো নির্মাণ করা সেট।বরং পারফরম্যান্সের স্থান নির্ধারণ করে আলো এবং সঙ্গীতের প্রয়োগ করা হয়েছে৷ মঞ্চের একদিকে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে যেখানে বসে শিল্পীরা বাদ্যযন্ত্র সহকারে লাইভ মিউজিক পারফর্ম করেছেন৷ সুদীপ স্যান্যালের আলোর প্রয়োগ এবং সুরকার শুভদীপ গুহ ও তাঁর সহযোগী মিউজিক্যাল টিমের কাজের কথা উল্লেখ করতেই হয়৷আর গান ও নাচের তালে তালে নাটক এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন কয়েক জন সিনিয়রের সঙ্গে একঝাঁক তরুন নাট্যকর্মী৷মূল দুই চরিত্র রোমিও ও জুলিয়েটের ভূমিকায় যথাক্রমে ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় এবং শ্বেতা বাগচীর অভিনয় যথাযথ।