মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে ইউনিফর্ম প্রদান কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বছর দুটি ইউনিফর্ম দেওয়া হয়। এবার মার্চ মাসে প্রথম সেট ইউনিফর্ম বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, এবং নবান্ন থেকে এটি দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ইউনিফর্ম তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে, যা রাজ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। এর ফলে, রাজ্য আর অন্য কোনও বাহ্যিক সরবরাহকারীর উপর নির্ভরশীল নয়, এবং প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত এবং কার্যকরী হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিবেদন আসছে, যেখানে কিছু জেলার কাজ অনেকটাই শেষের পথে, আবার কিছু জেলার কাজ ধীর গতিতে চলছে। এই মন্থর গতিতে চলা জেলাগুলিকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে দ্রুত কাজ শেষ করা হয়।
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, মালদা এবং কোচবিহার জেলার কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে অন্যান্য জেলার পরিস্থিতি এখনও আশানুরূপ নয়। এই কারণে, জেলা প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা যায়।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুলের সংখ্যা ৮২,৯০৬টি, যেখানে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭ লক্ষ।
এদের মধ্যে প্রত্যেককে দুটি ইউনিফর্ম দেওয়া হবে, এবং প্রথম সেটের বিতরণ মার্চ মাসেই শুরু হবে। দ্বিতীয় সেট বিতরণের কাজ পরে শুরু হবে। প্রথম সেটের উৎপাদনের কাজ প্রায় ৪৫% সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে নিয়মিতভাবে ইউনিফর্ম তৈরির কারখানা পরিদর্শন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্লক অফিসারদের প্রতি ১৫ দিন অন্তর পরিদর্শন করার এবং জেলা স্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে একবার করে পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এখন সময়ের চাপ স্পষ্ট, এবং সব কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য প্রশাসন সজাগ ও তৎপর। রাজ্য সরকার আশাবাদী যে খুব শীঘ্রই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ইউনিফর্ম বিতরণ শুরু হবে, যা শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে।
এছাড়া এই উদ্যোগটি শুধু ছাত্রদের উপকারে আসছে না, বরং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে কর্মসংস্থানের সুযোগও প্রদান করছে।