বিয়ের পিঁড়িতে বসতে আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। একদিকে প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ,(Dilip-Rinku Marriage) অন্যদিকে রিঙ্কু মজুমদার—(Dilip-Rinku Marriage) একজন রাজনৈতিকভাবে পরিচিত মুখ, অপরজন রাজনীতির আঙিনাতেই তৈরি এক দৃঢ়চেতা নারী। কিন্তু এই বিয়ের গল্পটা শুধু দুই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বন্ধনে বাঁধা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পরিবার, সন্তান এবং জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।
চরম ব্যস্ততার মধ্যেও সংবাদমাধ্যমের সামনে অকপটে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন হবু কনে রিঙ্কু (Dilip-Rinku Marriage) । কেমন করে দিলীপ ঘোষের (Dilip-Rinku Marriage) সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠল, কীভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন, ছেলে কেমনভাবে নিয়েছে মায়ের এই সিদ্ধান্ত—সবই জানালেন নির্দ্বিধায়।
ছেলেকে নিয়ে প্রশ্নে গর্বিত মা
রিঙ্কু মজুমদার(Dilip-Rinku Marriage) বিবাহ বিচ্ছিন্না। তাঁর প্রায় পঁচিশ বছরের একমাত্র পুত্র এখন সল্টলেকের একটি আইটি সংস্থায় কর্মরত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—এই নতুন জীবনের যাত্রায় সেই ছেলে কতটা যুক্ত? বিয়েতে কি তিনি থাকছেন না?
রিঙ্কু (Dilip-Rinku Marriage) বললেন, “বিয়েতে ছেলেকে রাখব না বলেই আমরা ঠিক করেছিলাম। ঘটনাচক্রে ওর অফিস থেকে চার দিনের ছুটি পড়েছে, তাই ও আজ সকালেই বেড়াতে চলে গিয়েছে।” যদিও ছেলে বিয়েতে থাকছেন না, তবুও তাঁর পূর্ণ সমর্থন আছে মায়ের সিদ্ধান্তে।
এক গর্বিত মায়ের মতো রিঙ্কু বলেন, “ছেলে খুব খুশি। আমি মনে করি, ওর জীবনেও একজন বাবার জায়গা ফাঁকা ছিল। ও নিজেই আগ্রহ দেখিয়েছিল দিলীপদার সঙ্গে দেখা করার। এমনকি ওঁরা একবার একসঙ্গে ইডেনে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন।”
সম্পর্কের সূচনা: রাজনীতির মঞ্চ থেকে ব্যক্তিগত জীবনে
রিঙ্কু(Dilip-Rinku Marriage) নিজেও একজন বিজেপি কর্মী। সেই সূত্রেই আলাপ হয় দিলীপ ঘোষের সঙ্গে। তবে এই আলাপ ধীরে ধীরে রূপ নেয় আন্তরিক সম্পর্কে। রিঙ্কুর নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, “আমার প্রথম বিয়ের ৬ মাসের মধ্যেই বুঝে গিয়েছিলাম, আমি একটা ভুল করে ফেলেছি। তাই দ্বিতীয়বার খুব বুঝেশুনে পা ফেলেছি। ওঁর মধ্যে যে মানবিক গুণগুলো দেখেছি, তাতেই মুগ্ধ হয়েছি।”
তিনি জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার বিয়ের প্রস্তাব দেন দিলীপকে। প্রথমে কোনো উত্তর না পেলেও, ১৫ দিন পর আবার মনে করিয়ে দেন। এরপর একদিন একটি স্বপ্ন দেখেন দিলীপকে নিয়ে—সেই কথাও বলেন তাঁকে। সেখান থেকেই শুরু হয় কথোপকথনের সূক্ষ্ম যোগাযোগ, যা ধীরে ধীরে গড়ে তোলে বিশ্বাসের ভিত।
“দল, রাজনীতি একদিন সবই ফুরিয়ে যায়…”
দিলীপ ঘোষকে (Dilip-Rinku Marriage) বিয়ের জন্য রাজি করানোর কৌশলও অকপটে জানালেন রিঙ্কু। বললেন, “একটা সময়ের পর দল, রাজনীতি সবই ফুরিয়ে যায়। তখন দরকার হয় একজন সঙ্গীর, ঘরের একজন আপনজনের। এই কথাটা ওঁকে বোঝানোর চেষ্টা করি।”
তবে রিঙ্কু (Dilip-Rinku Marriage) চান না, এই বিয়ের পর দিলীপ ঘোষ রাজনীতি থেকে সরে আসুন। বরং তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “উনি যেন দলের জন্য আরও বেশি করে কাজ করেন, আমি সেটাই চাই। আমি ওঁকে কোনওভাবেই আটকে রাখতে চাই না। আমি বরং সহচর হয়ে পাশে থাকতে চাই।”
এই বিয়ে শুধুই দুই মানুষে সীমাবদ্ধ নয়। এটা নতুন করে শুরু করার সাহস, অতীত ভুল থেকে শেখা, এবং জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়কে মন থেকে গ্রহণ করার গল্প। রিঙ্কু মজুমদারের এই অকপটতা এবং সংবেদনশীলতা শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্ক নয়, বরং একজন নারীর নিজের মতো করে জীবন বেছে নেওয়ার প্রতিচ্ছবি। তাঁদের এই নতুন পথচলা যেন আশীর্বাদে ভরে ওঠে, সেটাই কাম্য।