পঞ্চমীতেই দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ মহম্মদ আলি পার্কের পুজো মণ্ডপ

কলকাতা ২৭ সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুজোর (Durga Puja) পঞ্চমীর রাতে কলকাতার দুটি বিশিষ্ট পুজো মণ্ডপ মহম্মদ আলি পার্ক এবং সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে উত্তপ্ত…

Durga Puja

কলকাতা ২৭ সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুজোর (Durga Puja) পঞ্চমীর রাতে কলকাতার দুটি বিশিষ্ট পুজো মণ্ডপ মহম্মদ আলি পার্ক এবং সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মহম্মদ আলি পার্কের উদ্যোক্তারা পুলিশের উপর রুট পরিবর্তনের অভিযোগ তুলে শনিবার রাতে মণ্ডপের আলো নিভিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য পুজো বন্ধ করে দেন।

Advertisements

অন্যদিকে, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের উদ্যোক্তা তথা বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতা’ এবং ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ আচরণের অভিযোগ তুলে পুজো বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই ঘটনাগুলো শহরের পুজোর আনন্দে ছায়া ফেলেছে এবং রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।মহম্মদ আলি পার্কের উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, প্রতি বছর দর্শনার্থীরা যে রুট ধরে তাঁদের মণ্ডপে আসেন, এবার পুলিশ তা পরিবর্তন করে দিয়েছে।

   

এর ফলে দর্শনার্থীরা অন্য মণ্ডপে চলে যাচ্ছেন, এবং তাঁদের পুজোতে ভিড় কমে গেছে। ক্ষুব্ধ উদ্যোক্তারা শনিবার রাতে মণ্ডপের আলো বন্ধ করে পুজো দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেন। ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেছেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কোনো রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়নি, পুলিশ কাউকে জোর করে কোথাও যেতে বাধ্য করেনি।” পুলিশের তরফে দাবি, নিরাপত্তা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্যই রুট পরিচালনা করা হয়েছে। তবে উদ্যোক্তারা এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ।

অন্যদিকে, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র। এই পুজোর থিম ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে পুলিশের বাধার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। শুক্রবার চতুর্থীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই পুজোর উদ্বোধন করেন। কিন্তু শনিবার সজল ঘোষ এক সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে বলেন, “প্রতি বছর পুলিশের অসহযোগিতা এবং অসভ্যতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

এভাবে চললে পুজো চালানো সম্ভব নয়।” তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ ৪০ ফুটের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে দর্শনার্থীদের ১৫ ফুটের সরু রাস্তা দিয়ে ৩-৩.৫ কিলোমিটার ঘুরিয়ে মণ্ডপে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে, যা তিনি ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

‘থলপতি’ বিজয়ের সভায় ট্র্যাজেডি: শিশু সহ পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল ১০ জনের

কলকাতার পুলিশ কমিশনার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “মানুষের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।” তবে সজল ঘোষের হুঁশিয়ারি—পুজো বন্ধ করে দেওয়ার—রাজনৈতিক রঙ নিয়েছে। তিনি বলেন, “পুলিশের সঙ্গে মারপিট, ঝগড়া করে পুজো চালানো সম্ভব নয়। সরকারের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করব।” এই ঘটনায় বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুজোর মতো শান্তিপূর্ণ উৎসবে এমন বিতর্ক অপ্রত্যাশিত।