পাঞ্জাবের মোহালিতে তিন জিম্বাবুয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যারা কলকাতার (Kolkata) একাধিক বাসিন্দাকে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে জড়িত। কলকাতা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, এই প্রতারকরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং অ্যাবট ফার্মাসিউটিক্যালসের নাম ব্যবহার করে উচ্চ মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিকারদের ফাঁদে ফেলত। এই ঘটনাটি শনিবার প্রকাশ্যে আসে, যখন মোহালি পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ট্রানজিট রিমান্ডের প্রক্রিয়া শুরু করে।
Read Hindi: जिम्बाब्वे के ठगों ने कोलकाता में की करोड़ों की ठगी, गिरफ्तार
অভিযুক্তদের নাম টিনাশে গাদজিকোয়া প্রাইস, মালভার্ন মাতুমগামিরে এবং নামহুঙ্গা লেনন কুদাকোয়াশে। তারা নকল লেটারহেড, ইমেল ঠিকানা এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে প্রতারণার জাল বিস্তার করত। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং বেশ কিছু অপরাধমূলক নথি বাজেয়াপ্ত করেছে। তালতলা এলাকার একজন বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়, যিনি দাবি করেন যে তিনি এই তিনজনের কাছে ১ কোটি টাকা হারিয়েছেন।
কলকাতা পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে যে অভিযুক্তরা নিজেদের WHO এবং অ্যাবট ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিনিয়োগের নামে প্রতারণা করত। তারা ভুক্তভোগীদের উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত। এই প্রতারণার জন্য তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করত, যার মধ্যে ছিল জাল ইমেল এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। এই ঘটনা ভারতের ক্রমবর্ধমান সাইবার অপরাধের একটি উদাহরণ, যেখানে বিদেশি নাগরিকরা জড়িত। মোহালি পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা এই তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, এবং তাদের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে এই প্রতারকদের ধরা সম্ভব হয়েছে।
এই গ্রেপ্তারি ভারতের বিভিন্ন শহরে চলমান সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন। গত কয়েক বছরে মোহালি এবং কলকাতায় একাধিক জাল কল সেন্টার উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে বিদেশি নাগরিকরা ভারতীয় এবং বিদেশি নাগরিকদের প্রতারিত করেছে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের (IT Act) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই প্রতারণার ঘটনা কলকাতার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পুলিশ জনসাধারণকে এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদে না পড়ার জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে, অজানা ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিশ্রুতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিনিয়োগের আগে যাচাই করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা ভারতীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির ক্রমবর্ধমান দক্ষতা এবং সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।