মানহানির অভিযোগে তৃণমূল মুখপাত্রকে কাঠগড়ায় তুললেন মিঠুন

ফের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার ঝড়। বলিউড অভিনেতা ও বর্তমানে বিজেপির অন্যতম মুখ, মিঠুন চক্রবর্তী, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Mithun on Kunal) বিরুদ্ধে…

Mithun Chakraborty Sues Kunal Ghosh for 100 Crore in Defamation Case

ফের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার ঝড়। বলিউড অভিনেতা ও বর্তমানে বিজেপির অন্যতম মুখ, মিঠুন চক্রবর্তী, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Mithun on Kunal) বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন। কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা এই মামলার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

মিঠুনের অভিযোগ, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Mithun on Kunal) উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অসত্য, কুরুচিকর ও মানহানিকর মন্তব্য করেছেন। এই ধরনের মন্তব্যে শুধু তাঁর সামাজিক মর্যাদা নয়, তাঁর পেশাগত জীবনেও প্রভাব পড়েছে বলে দাবি মিঠুনের।

   

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াতে কুণাল ঘোষ যে মন্তব্য করেছেন, তা জনসমক্ষে মিঠুন চক্রবর্তীর ভাবমূর্তি এবং সামাজিক অবস্থানকে আঘাত করেছে। এমনকি তাঁর ছেলে ও স্ত্রীকেও টেনে এনে এমন কিছু বক্তব্য রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মানহানিকর।

মিঠুনের(Mithun on Kunal) কথায়, “আমি শুধু একজন অভিনেতা নই, আমি একজন ভারতীয় নাগরিক। আমার একটা পরিবার, আমার একটা সম্মান আছে। সেটা যেভাবে বারবার অপমানিত করা হয়েছে, সেটা আমি মেনে নিতে পারছি না। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”

কুণালের পাল্টা আক্রমণ

তবে এই মামলা ঘিরে একচুলও পিছু হঠেননি কুণাল ঘোষ। বরং তাঁর বক্তব্য,
“যাঁর মান থাকে, তাঁর মানহানি হয়। মিঠুন চক্রবর্তীর মান আছে নাকি যে মানহানি হবে? তিনি কি এতবার দল বদল করেননি? তিনি তো নিজেই নিজের সম্মান হারিয়েছেন!” এই মন্তব্যেই স্পষ্ট, কুণালও কোর্টে নিজের অবস্থানে অনড় থাকবেন এবং এই মামলাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেই মানছেন।

Advertisements

রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ঘটনাটির বিশ্লেষণ

এই ঘটনা শুধু একজন ব্যক্তি বা দু’জন রাজনীতিকের মধ্যে লড়াই নয়, বরং তাতে উঠে আসছে রাজ্য রাজনীতির আরও গভীর সংঘাত। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে রাজ্যে বিজেপির যে অবস্থান তা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে টানাপোড়েন চূড়ান্ত পর্যায়ে। মিঠুনের মত একজন জনপ্রিয় ও জাতীয় পর্যায়ের পরিচিত মুখের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করে কার্যত তাঁকে আক্রমণের কেন্দ্রে আনছে শাসকদল।

উল্লেখ্য, মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun on Kunal) রাজনীতিতে প্রথমবারের জন্য পা রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সদস্য হিসেবে। পরে তিনি সেখান থেকে ইস্তফা দেন এবং বিজেপিতে যোগ দেন ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই। সেই পদক্ষেপ নিয়ে তৃণমূল নেতারা শুরু থেকেই মিঠুনকে “চাপের মুখে দলবদলকারী” হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন। 

এই মামলা বর্তমানে বিচারাধীন এবং আদালত কবে শুনানি শুরু করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। মিঠুনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ, যা যে কোনো সাধারণ মানহানির মামলার তুলনায় অত্যন্ত বড় অঙ্ক। এই মামলার ভিত্তিতে যদি কোর্ট প্রাথমিকভাবে মামলাটি গ্রহণ করে এবং কুণাল ঘোষকে জবাবদিহি করতে বলে, তবে রাজনৈতিকভাবে তা তৃণমূলের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে।