আচমকা বন্ধ নাট্যদলের অনুদান! রাজনীতির জাঁতাকলে কি সংস্কৃতির মাপকাঠি?

আচমকা বন্ধ হয়ে গেল বেশ কিছু নাট্যদলের অনুদান। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু নাট্যদলের(Bengali Theatre) অনুদানের সংখ্যা একেবারেই কমিয়ে দেওয়া হল। আবার কিছু দল নাট্যের…

theatre

আচমকা বন্ধ হয়ে গেল বেশ কিছু নাট্যদলের অনুদান। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু নাট্যদলের(Bengali Theatre) অনুদানের সংখ্যা একেবারেই কমিয়ে দেওয়া হল। আবার কিছু দল নাট্যের অনুদানের জন্য আবেদন করেছিল, সেরকম বেশ কিছু দলের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু কেন এই অনুদান বাতিল? এই আবহে একদিকে যেমন ফুঁসছে বাংলার নাট্যদলগুলি ঠিক তেমনি প্রলেপে মলম লাগাতে আসরে নেমেছে বিজেপির একাংশ।

মধ্যবিত্তের হেঁশেলে আগুন, আলু-টমেটো-পেঁয়াজের দামে চোখে জল

   

বহু বছর ধরেই নাটকের প্রচার ও প্রসারের জন্য বিভিন্ন নাট্যদলের পরিচালক ও বাকি সদস্যদের ‘গুরু-শিষ্য পরম্পরা’ নামে অনুদান দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন কারণে এরাজ্যের বেশ কয়েকটি নাট্যদলের অনুদান বন্ধ করা হয়েছে। এর নেপথ্যে নাট্য ব্যক্তিত্বরা রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। প্রসঙ্গত গুরু অর্থাৎ পরিচালকরা পেয়ে থাকেন ২০ হাজার এবং শিষ্যরা পেয়ে থাকেন ১০ হাজার করে। তবে এই টাকা বছরে একত্রিত হয়ে দলের অ্যাকাউন্টে ঢোকে। কিন্তু এইবার সেইখানেই কোপ দিল কেন্দ্রীয় সরকার।

হাওড়া ডিভিশনের যাত্রীদের জন্য বিরাট ঘোষণা রেলের

কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে এ রাজ্যের প্রায় ৩০টি দল রয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপের নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ রয়েছে বলেই মনে করছেন নাট্যজগতের একাংশ। প্রায় ১৮ বছর ধরে কেন্দ্রীয় অনুদান পাচ্ছে নির্দেশক মেঘনাদ ভট্টাচার্যের দল ‘সায়ক’। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ‘দলের ১৮ জনের টাকাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে! জেলার একাধিক দলেরও একই অবস্থা। অনুদান বন্ধের নেপথ্যে যে সমস্ত কারণ দেখানো হয়েছে, তা হাস্যকর।’ জানা গিয়েছে যে কোনও দলকে বলা হয়েছে তারা এখন স্বাবলম্বী। তাই আর অনুদান পাবে না। আবার কারও অতীতে কর্পোরেট সংস্থার সঙ্গে কাজের বিষয়কে ‘অজুহাত’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কাউকে বাড়ি তৈরির অনুদান দেওয়া হয়েছে। সেই বাড়ি কেন ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, সেই যুক্তিতেও তাদের অনুদান বন্ধ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নাট্যকর্মী কলকাতা ২৪x৭.ইনকে জানিয়েছেন যে, ‘ অনেক দলের ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে কলকাতার দিকে নাট্যদলের সংখ্যাই বেশি। জেলার ক্ষেত্রে এই ঘটনা খুব কম।’ তাঁর আরও বক্তব্য যে, ‘ তৃণমূল ঘেঁষা দলগুলির উপর প্রকোপ বেশি।’

জামিন পেয়েও মিলল না স্বস্তি! তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে তলব ইডির

গৌতম হালদারের ‘নয়ে নাটুয়া’র দু’জন সদস্যের অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কোনও কারণ না দর্শিয়েই। নাট্যদল ‘সংসৃতি’র কর্ণধার দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বিষয়টির নেপথ্যে রাজনৈতিক ‘ষড়যন্ত্র’-এর আঁচ পাচ্ছেন। ১২ বছর তাঁরা অনুদান পাচ্ছিলেন। এ বার তাঁর দলের ১৭ জনের অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ অগস্ট সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের একাধিক নাট্যদল এই বিষয়ে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরবে। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথেও তারা যেতে রাজি, এমন আঁচও পাওয়া যাচ্ছে।

এক তৃণমূল ছাত্রনেতা কলকাতা ২৪x৭.ইনকে জানালেন যে, ‘ অনেক দলের কাগজপত্র ঠিক নেই। সেই জন্যই এই পদক্ষেপ। বিষয়টাকে রাজনীতির রঙ না চাপানোই ভাল।’ শুধু বাংলা নয়, দেশের অনেক নাট্যদলের উপরেই কোপ পড়েছে। এ নিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘কেন বা কী ভাবে এই তালিকা তৈরি হয়েছে আমার জানা নেই। তবে বিজেপির পক্ষে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই। আমি এ নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলব।’