পশ্চিমবঙ্গের কাঁচা বাজারে এই সপ্তাহে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে (Vegetable Price)। সবজি ও ফলের দামে তুলনামূলক স্থিতিশীলতা লক্ষ্য করা গেছে, যা গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমে আসায় সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে দামে স্থিতিশীলতা এসেছে।
তবে, কিছু নির্দিষ্ট সবজি ও ফলের দাম এখনও মধ্যবিত্তের বাজেটের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।এই সপ্তাহে কলকাতার খুচরা বাজারে বড় পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩৫-৪৮ টাকা এবং ছোট পেঁয়াজের দাম ৬৬-৯১ টাকার মধ্যে রয়েছে। টমেটোর দাম প্রতি কেজি ৫৩-৭৩ টাকা, যা গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম। কাঁচা লঙ্কার দাম ৫৪-৭৪ টাকা প্রতি কেজি, যা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এখনও উচ্চ।
আলুর দাম তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী, প্রতি কেজি ৩৫-৪৮ টাকা। বীটরুট এবং বাঁধাকপির দামও যথাক্রমে ৩৬-৫০ টাকা এবং ৩৬-৫০ টাকা প্রতি কেজি, যা মধ্যবিত্তের জন্য কিছুটা স্বস্তিদায়ক। অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচা কলার দাম প্রতি কেজি ১৩-১৮ টাকা, লাউ ৪০-৫৪ টাকা, ক্যাপসিকাম ৫২-৭১ টাকা এবং করলা ৪২-৫৮ টাকা প্রতি কেজি।
শাকসবজির মধ্যে নোটেশাকের দাম প্রতি কেজি ২০-২৮ টাকা, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য সহজলভ্য। ফলের ক্ষেত্রে আমলকির দাম প্রতি কেজি ১০২-১৪০ টাকা, যা এখনও বেশি। বেবি কর্ন এবং বাটার বিনসের দাম যথাক্রমে ৫৪-৭৪ টাকা এবং ৫৯-৮১ টাকা প্রতি কেজি। কলার ফুলের দাম প্রতি কেজি ২৪-৩৩ টাকা এবং চালকুমড়ার দাম ২০-২৮ টাকা প্রতি কেজি, যা মোটামুটি সাশ্রয়ী।
কলকাতার কাঁচা বাজারে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, যা দাম কমাতে সহায়ক হয়েছে। তবে, আমলকি এবং বেবি কর্নের মতো কিছু পণ্যের দাম এখনও উচ্চ, কারণ এগুলোর উৎপাদন এবং সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম। একজন বিক্রেতা বলেন, “মধ্যবিত্ত ক্রেতারা এখন আলু, বাঁধাকপি, লাউয়ের মতো সাশ্রয়ী সবজির দিকে ঝুঁকছেন।
দাম বেশি হলে অনেকেই কম পরিমাণে কিনছেন।”তৃণমূল কংগ্রেস সরকার এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের স্বস্তির জন্য কাজ করছে বলে জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কৃষি বিপণন বিভাগের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা বাড়িয়ে এবং সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালী করে আমরা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই।”
তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকার সাশ্রয়ী দামে সবজি বিক্রির জন্য সুফল বাংলার মতো উদ্যোগ আরও জোরদার করছে। অন্যদিকে, বিরোধী দল বিজেপি অভিযোগ করেছে যে, রাজ্য সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সবজির দাম এখনও অনেকের নাগালের বাইরে।
রাজ্য সরকারের উচিত মধ্যস্থতাকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা এবং কৃষকদের সরাসরি বাজারে পণ্য সরবরাহের সুযোগ দেওয়া।”বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সরবরাহ বৃদ্ধি এবং মৌসুমি পরিবর্তনের কারণে আগামী সপ্তাহগুলিতে দাম আরও কমতে পারে। তবে, আমদানি-নির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে, যেমন আমলকি বা বেবি কর্ন, দাম কিছুটা বেশি থাকতে পারে।
মোদী সরকারের সৌজন্যে একধাক্কায় ভারতে চিকিৎসা খরচ অনেকটাই কমছে
মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, তারা স্থানীয় বাজারে দাম যাচাই করে এবং সকালে তাজা পণ্য কেনার চেষ্টা করুন। স্থানীয় কৃষি বাজার থেকে কেনাকাটা করলে দাম কিছুটা কম হতে পারে। এই সপ্তাহে কাঁচা বাজারে সামান্য স্বস্তি এলেও, মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য দাম নিয়ন্ত্রণ এবং সরবরাহ বাড়ানোর দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আগামী দিনে আবহাওয়া এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর নির্ভর করে বাজারের পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।