আত্মহত্যার চেষ্টা যাত্রীর, সপ্তাহান্তে ফের ব্যাহত মেট্রো পরিষেবা

কলকাতা:  সপ্তাহান্তে ফের ব্যাহত মেট্রো (Metro) পরিষেবা৷ শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ কলকাতাবাসীদের দৈনন্দিন যাতায়াত ব্যবস্থায় এক অপ্রত্যাশিত বিপর্যয় ঘটল। দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষগামী মেট্রো চলাচলে…

Kolkata Metro to Offer 5% Fare Discount on Online Ticket Bookings

কলকাতা:  সপ্তাহান্তে ফের ব্যাহত মেট্রো (Metro) পরিষেবা৷ শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ কলকাতাবাসীদের দৈনন্দিন যাতায়াত ব্যবস্থায় এক অপ্রত্যাশিত বিপর্যয় ঘটল। দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষগামী মেট্রো চলাচলে হঠাৎ থমকে গেল ছন্দ।

দুপুর ঠিক ১২টা নাগাদ সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে এক ব্যক্তি ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় কলকাতা মেট্রো (Metro) রেলের কবি সুভাষ অভিমুখী পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে স্থগিত রাখা হয়।

   

ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই সংশ্লিষ্ট স্টেশনে ছুটে আসে রেল পুলিশ ও মেট্রো (Metro) আধিকারিকরা। তড়িঘড়ি করে মেট্রোর লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে উদ্ধারকার্য শুরু হয়। যদিও প্রাথমিক সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রীটি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁর পরিচয় এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

এই ঘটনার পর মেট্রোর (Metro) কবি সুভাষ অভিমুখী পরিষেবা ব্যাহত হয়। গিরিশ পার্ক স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। যাত্রীদের গাড়ি খালি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। ফলে আচমকাই বিপাকে পড়েন বহু অফিসগামী যাত্রী, ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ যাত্রীরা। স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন, উত্তেজনা, এবং অসন্তোষ দেখা যায়।

মেট্রোর মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এই দুর্ঘটনার কারণে মেট্রোর (Metro) দক্ষিণগামী রুট বন্ধ রাখা হয়েছে। যতক্ষণ না উদ্ধার কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে ও ট্র্যাক পরিষ্কার হচ্ছে, পরিষেবা চালু সম্ভব নয়। আপাতত গিরিশ পার্ক পর্যন্ত ট্রেন চলবে। যাত্রীদের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।”

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। বয়স আনুমানিক ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisements

মেট্রো (Metro) পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল বহু মানুষের জন্য এই ধাক্কা বড় রকমের সমস্যা তৈরি করে। অফিস টাইমে পরিষেবা বন্ধ থাকায় অনেকেই বিকল্প পরিবহণের খোঁজে রাস্তায় নেমে পড়েন। সেইসঙ্গে এসপ্ল্যানেড, গিরিশ পার্ক, মহাত্মা গান্ধী রোড, চাঁদনি চকের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়।

অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মেট্রো (Metro) ছাড়া আমরা ভাবতেই পারি না। তবে এমন আত্মহত্যার ঘটনাগুলি নিয়মিতই ঘটছে। এর জন্য আরও কড়া নিরাপত্তা দরকার।” কেউ কেউ পরামর্শ দেন, প্ল্যাটফর্মে বাউন্ডারি দেওয়ালের ব্যবস্থা করা হোক যাতে কেউ লাইনে ঝাঁপাতে না পারেন।

ঘটনার জেরে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হলেও পুলিশ ও মেট্রো আধিকারিকরা দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। দুপুর ২টো নাগাদ পরিষেবা আংশিক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, পুরোপুরি পরিষেবা কবে চালু হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এদিনের এই আত্মঘাতী ঘটনার ফলে ফের প্রশ্ন উঠেছে, মেট্রো স্টেশনগুলিতে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট কি না। কলকাতা মেট্রো রেল কতৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।