মেট্রোর গন্তব্য আরও এগোচ্ছে, বাড়ছে পরিকাঠামো

কলকাতা: শহরের মেট্রো (Metro) জাল আরও বিস্তৃত হতে চলেছে। পুরাতন ‘জোকা–এসপ্ল্যানেড’ পার্পল লাইন এবার নতুন স্টপেজ পাবার সম্ভাবনা—‘আইআইএম জোকা’ নামে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, জোকা…

Kolkata Metro

কলকাতা: শহরের মেট্রো (Metro) জাল আরও বিস্তৃত হতে চলেছে। পুরাতন ‘জোকা–এসপ্ল্যানেড’ পার্পল লাইন এবার নতুন স্টপেজ পাবার সম্ভাবনা—‘আইআইএম জোকা’ নামে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, জোকা থেকে আইআইএম জোকা পর্যন্ত একটি নতুন মেট্রো স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ১৪.১ কিমি দৈর্ঘ্যের রুট প্রায় ১৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে এবং যাত্রীসেবা আরও সামগ্রিকভাবে প্রসারিত হবে।

স্টেশন ও করিডর বিস্তার
নতুন স্টেশন: জোকা থেকে মাত্র ১.৭ কিমি দূরে অবস্থিত এই স্টেশন মূল পার্পল লাইনের প্রিমিয়াম এক্সটেনশন হবে।

   

মোট দৈর্ঘ্য: পূর্বে থাকা ১৪.১ কিমি রাস্তা মেট্রো চালুর পর এবারে প্রায় ১৮ কিমি হয়ে যাবে।

মাটির উপরেস্টেশন (Elevated): নতুন স্টেশনসহ ৯টি স্টেশন থাকবে আকাশের নিয়ন্ত্রণে—আইআইএম জোকা, জোকা, ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার, তারাতলা, মাঝেরহাট ও মোমিনপুর।

মাটির নিচে (Underground): বাকি ৫টি স্টেশন হবে ভূমিগর্ভে—খিদিরপুর, ভিক্টোরিয়া, পার্ক স্ট্রিট, এসপ্ল্যানেড এবং ইডেন গার্ডেন্স। মাটির নিচে চলার এই অংশটি শহরের কেন্দ্রীয় আকর্ষণীয় স্থানগুলোকে ছুঁয়ে যাবে।

কেন এই এক্সটেনশন জরুরি?
১. শিক্ষা ও ক্যাম্পাসে সহজ যোগাযোগ
আইআইএম কলকাতার অবস্থান নতুন করিডরে সংযুক্ত হলে শহর ও শিক্ষার্থী উভয়েরই সুবিধা হবে। কর্মজীবী ও অবসর যাত্রীদের যাতায়াত আরও দ্রুত এবং সহজ হবে।

২. পাশা ও জনসংখ্যার বৃদ্ধি
বেহালা, ঠাকুরপুকুর, মাঝেরহাট এলাকা ইতিমধ্যেই বাসযোগ্য ও বর্ধিত হচ্ছে। মেট্রো এক্সটেনশন দিয়ে যানজট কমে এবং মেগা শহরে পরিবহন ব্যবস্থার চাপ হ্রাস পাবে।

৩. আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন
মেট্রো অ্যাক্সেসেসরিসহ আশেপাশের এলাকাগুলিতে ‍কমার্সিয়াল বিনিয়োগ বাড়বে। রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে তাল মেলাবে নতুন স্যাঁতসেঁতে মার্কেট ও ই-কমার্স সংযোগের সুযোগ।

Advertisements

৪. ট্যুরিস্ট ফ্রেন্ডলি ডেভেলপমেন্ট
পার্ক স্ট্রিট, ভিক্টোরিয়া ও ইডেন গার্ডেন্স—শহরের সাংস্কৃতিক “হাব”—এর সন্ধান করতে ইচ্ছুক পর্যটকদের জন্য পরিবহন সহজ হবে।

বিশেষ অনুমতি ও নোটিফিকেশন বিলম্ব: যদিও এই পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, “নো টিফিকেশন” (Notification) এখনো আসেনি। বিশেষ করে এসপ্ল্যানেড–ইডেন গার্ডেন্সের মতো সদরন্ত পয়েন্টে অনুমোদনের জন্য সময় লাগে।

জটিল প্রকৌশল কাজ: ভূ-গর্ভে গর্ত করে স্টেশন তৈরি ও নির্মাণ সামগ্রিকভাবে সবচেয়ে সময় এবং অর্থ-সাপেক্ষ। মাটির উপরের অংশ তুলনামূলক সহজ হলেও, সাউন্ড-প্রুফিং ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারি সূত্র বলছে, একবার নোটিফিকেশন জারি হলে প্রকল্পটি তড়িঘড়ি শুরু করা হবে। ধরনা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে জোকা থেকে আইআইএম জোকা পর্যন্ত সমস্ত বেসিক কর্ম সম্পন্ন হবে, এরপর ধাপে ধাপে পরবর্তী স্টেশনগুলিতে কাজ শুরু হবে। তবে নির্দিষ্ট সময়সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

কলকাতার পরিবহন নীতিতে এই এক্সটেনশন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি শুধু একটি স্টেশন বাড়ানোর পরিকল্পনা নয়, এটা শহরকে এক নব দৃষ্টিতে সাজানোর একটি অংশ। মেট্রো রুট সম্প্রসারণে জনসংখ্যা ও শহর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের একটি মডেল তৈরি হবে। ফলে কলকাতা ‘মেট্রো-নির্ভর শহর’ হিসাবে পরিচিত হবে আবার।

বাংলা সংবাদ ব্লগে এমন আলোচনা আশা মানুষের মনে একটা ইতিবাচক প্রত্যাশা করে তুলেছে—“শহর আর মানুষ, ঢাকা পড়ুক না পড়ুক”, ভবিষ্যতে কল্যাণের ছোঁয়া পাবেন সকলে।