কলকাতা: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের (21 July TMC Rally) মঞ্চকে সামনে রেখে এক বিশাল মেগা ইভেন্টের দিকে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। ধর্মতলায় শুরু হয়ে গিয়েছে মূল মঞ্চ তৈরির কাজ। এবারে তৃণমূলের পক্ষ থেকে তিনটি পৃথক মঞ্চ গড়ে তোলা হয়েছে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে।
মূল মঞ্চের আকার এবারে পূর্ববর্তী যেকোনও সময়ের তুলনায় অনেক বড় ও সুবিন্যস্ত। দলের তরফে জানানো হয়েছে, এখন তৃণমূল কংগ্রেস একটি বড় দল, তাই শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে অতিথি ও আমন্ত্রিত প্রায় ৬০০ জন নেতাকে বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই মূল মঞ্চে।
এই ত্রি-স্তর বিশিষ্ট মঞ্চটির উচ্চতা মাটি থেকে পর্যায়ক্রমে ১১, ১২ ও ১৩ ফুট। মঞ্চের দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট এবং প্রস্থ ৪২ ফুট। অর্থাৎ এত বড় মঞ্চ ধর্মতলার শহিদ দিবসের ইতিহাসে বিরল। যদিও বর্ষাকাল, ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, তবুও এবারের সমাবেশ হচ্ছে সম্পূর্ণ খোলা মঞ্চে। তবে সেই মঞ্চ ঘিরে থাকবে দলীয় পতাকার তেরঙ্গা রঙ— সবুজ, সাদা ও কমলা।
এছাড়াও এসপ্ল্যানেড ও পার্ক স্ট্রিট চত্বরে থাকছে প্রায় ১৫টি জায়ান্ট স্ক্রিন। সেই সঙ্গে শহরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতেও জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হচ্ছে, যাতে সভা সরাসরি দেখতে পারেন দলের সমর্থকরা। প্রায় ১,০০০ স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন গোটা এলাকাজুড়ে। এঁরা ভিড় সামলানো, দিশা দেখানো থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষায় সহায়তা করবেন।
তিনটি মঞ্চের পৃথক ভূমিকা নির্ধারিত রয়েছে—
প্রথম মঞ্চে থাকবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
দ্বিতীয় মঞ্চে শহিদ দিবস উপলক্ষে শহিদ পরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
তৃতীয় মঞ্চে বসবেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।
২১ জুলাইয়ের সভাটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে, ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে। এইদিনই অনুষ্ঠিত হয়েছে মঞ্চ তৈরির সূচনা উপলক্ষে খুঁটিপুজো। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, যুব সভাপতি সায়নী ঘোষ, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ একাধিক নেতা-নেত্রী।
সায়নী ঘোষ বলেন, “এবারেও আমরা রেকর্ড সংখ্যক মানুষের জমায়েত দেখব। এই সভা শুধু শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নয়, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার প্রধান ক্ষেত্র।” তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই সভা থেকেই স্পষ্ট করে দেবেন দলের ভবিষ্যৎ রণনীতি।”
২১ জুলাইয়ের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যজুড়ে কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও উত্তেজনা তুঙ্গে। বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, ট্রেন ও ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় কর্মী-সমর্থকেরা শহরে আসবেন বলে জানা গিয়েছে। শহিদ দিবসের এই মঞ্চ থেকেই একদিকে যেমন পুরনো দিনের কথা স্মরণ করা হবে, তেমনই আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রস্তুতির বার্তাও পৌঁছে যাবে জনতার কাছে।