শনিবার রাতে, নারকেলডাঙার খালপাড়ের ধারে একটি বস্তিতে হঠাৎ আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন বিস্তৃত হয়ে চলে আশেপাশের ঘরগুলিতে। নিঃশব্দে আগুন জ্বলতে থাকে, এবং এর তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তাতে প্রায় ৪০টি ঝুপড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এই আগুনের গ্রাসে হারিয়ে যায় একাধিক মানুষ এবং সম্পত্তি, এবং সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে যখন হাবিবুল্লা মোল্লা ঘুমিয়ে থাকার সময়ে আগুনের শিকার হন। তিনি আর ঘর থেকে বের হতে পারেননি, এবং তাঁর ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে প্রাণ হারান।
শুধু হাবিবুল্লা নয়, এই অগ্নিকাণ্ডে সকলেই হারিয়েছেন তাঁদের ঘরবাড়ি, যা ছিল তাঁদের জীবনের সমস্ত উপার্জন এবং পরিচিত পরিবেশ। এখন, তাঁরা ধ্বংসস্তুপের মধ্যে দাঁড়িয়ে, নিজের জীবনের নতুন আরম্ভের পথ খুঁজে চলেছেন। সর্বস্ব হারিয়ে তাঁরা এখন এক কঠিন জীবনযুদ্ধে নিপতিত।
এদিকে, দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাতভর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে আগুনের তীব্রতা আরও বাড়ে এবং দমকলের ১৬টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে শুরু করে। তবে রাতভর চেষ্টা সত্ত্বেও পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এখনও কিছু জায়গায় পকেট ফায়ার রয়েছে। তবে সাদা ধোঁয়া বের হওয়ার কারণে নতুন আতঙ্কের কোনও কারণ নেই, এমনটাই জানান দমকল কর্মীরা।
তবে প্রশ্ন উঠে আসে, কীভাবে এত বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটল? দমকলের সহায়তায় স্থানীয়রা আগুন নেভাতে সাহায্য করলেও, ক্ষতিগ্রস্তদের চরম অসহায়ত্ব ও হতাশা কোনভাবেই কমছে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও পরিষ্কার হয়নি। আগুনের উৎপত্তি সম্পর্কে তেমন কোনও প্রমাণ নেই, তবে এটি নিঃসন্দেহে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ছিল।
এখন, নারকেলডাঙার বস্তির মানুষজন শুধু জীবনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করতে চান, তবে তাঁদের সামনে রয়েছে এক কঠিন বাস্তবতা— ভেঙে পড়া ঘর, হারানো সম্পত্তি এবং স্বজনের শোক। তাঁরা আগামীর দিকে তাকিয়ে, সাহায্য এবং সহানুভূতির অপেক্ষায়।