বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই প্রতিবাদ, সভা থেকে স্বাস্থ্যের পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর

বুধবার দুপুরে প্রবল বর্ষা উপেক্ষা করে কলকাতার রাজপথে নামলেন তৃণমূল সভানেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত প্রায় আধ…

বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই প্রতিবাদ, সভা থেকে স্বাস্থ্যের পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর

বুধবার দুপুরে প্রবল বর্ষা উপেক্ষা করে কলকাতার রাজপথে নামলেন তৃণমূল সভানেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত প্রায় আধ ঘন্টার মিছিলে অংশ নেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস সহ একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব।

বৃষ্টির তেজ এতটাই ছিল যে ছাতা না থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল নেত্রী ও নেতা-নেত্রীরা একফোঁটা না থেমে হাঁটতে থাকেন। ভিজে একাকার হয়ে যান সকলে। তবুও সেই দৃঢ়তা ও মনোবলের সঙ্গে মিছিল শেষ করেন তাঁরা। এই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তৃণমূল নেত্রীর মানবিক ও সংগ্রামী ভাবমূর্তির প্রশংসায় ভরে ওঠে রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ‌্যে।

   

ডোরিনা ক্রসিং-এর মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাড়ি ফিরে গরম জলে স্নান করবেন। সঙ্গে আদা দিয়ে চা খাবেন আর একটা অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ খেয়ে নেবেন। আমি নিজেও এই নিয়ম মেনে চলি।”

তিনি আরও বলেন, সামনে অনেক বড় বড় কর্মসূচি ও লড়াই রয়েছে। তাই কেউ অসুস্থ হলে চলবে না। একুশে জুলাইয়ের মেগা সমাবেশের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। সেই সমাবেশে সবাইকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

চিকিৎসকেরাও বলেন, বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা লাগা, অ্যালার্জির সমস্যা, সর্দি-কাশি হতে পারে। তাই গরম জলে স্নান ও আদা চা খাওয়া সত্যিই কার্যকর। মুখ্যমন্ত্রীর এই পরামর্শ সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে পারে।

এদিন মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়েও মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, “এখন কলকাতায় বৃষ্টিতে জল খুব একটা জমে না। আগে সামান্য বৃষ্টি হলেই শহর ডুবে যেত। এখন ৯৯ শতাংশ এলাকার ড্রেনেজ সিস্টেম কভার করা হয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে।”

Advertisements

তিনি জানান, রাজ্য সরকার শহরের জল জমার সমস্যা সমাধানে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে। এখন আর পুরনো দিনের মত জল দাঁড়িয়ে থাকে না।

এই মিছিল যে নিছক প্রতীকী ছিল না, তা বুঝিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে আসে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ, বাংলায় বাঙালিদের উপর ‘বহিরাগত’দের দমননীতি এবং সংবিধান বাঁচানোর ডাক।

তাঁর কথায়, “রোদ, ঝড়, জল, বৃষ্টিতে আমাদের থামিয়ে রাখা যাবে না। মানুষই আমাদের শক্তি। এবার লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোটই কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করবে।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বৃষ্টিভেজা মিছিল রাজনীতির বাইরেও এক প্রতীক— সংগ্রাম, সংকল্প এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি।