যুদ্ধ থেকে দূষণ, প্লেন দুর্ঘটনা থেকে ড্রেজিং বিধানসভায় কেন্দ্রকে একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ মমতার

কলকাতা: বিধানসভার বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ইস্যু তুলে ধরে তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যুদ্ধ, পরিবেশ দূষণ, প্লেন…

Cabinet Clears New Subdivision in Waqf-Hit Murshidabad Region

কলকাতা: বিধানসভার বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ইস্যু তুলে ধরে তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যুদ্ধ, পরিবেশ দূষণ, প্লেন দুর্ঘটনা, সমুদ্র ও নদী ড্রেজিং—প্রায় প্রতিটি ইস্যুতেই কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। তাঁর মন্তব্যে উঠে এল দেশ ও পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ।

সাম্প্রতিক প্লেন দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকাল প্লেনে চাপতে মানুষ ভয় পাচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের চূড়ান্ত অবহেলা হচ্ছে। দুর্ঘটনার ঘটনা বারবার ঘটছে, অথচ তেমন কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।” তাঁর কথায়, যুদ্ধের পরিস্থিতি শুধু মানুষের জীবনকেই হুমকির মুখে ফেলছে না, সেই সঙ্গে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।

   

তিনি বলেন, “আমি সকলকে সতর্ক করছি। এই পৃথিবীতে যুদ্ধের কারণে আকাশ, সমুদ্র—সব জায়গায় দূষণ বাড়ছে। সমুদ্র জ্বললে, আকাশে আগুন লাগলে শুধু মানুষ নয়, পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে।” এমনকি তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধের আঁচ পড়ছে আমাদের পরিবেশে, আর তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হবে।”

এই পর্যায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অতীতের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। জানান, “রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আমাকে অ্যাঙ্গোলাতে পাঠানো হয়েছিল। বিশেষ একটি মিশনের কারণে আমাকে পাঠানো হয়। আমি সেটা দেশের স্বার্থে বলব না, কিন্তু যুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে জানি, তার কতটা মারাত্মক প্রভাব পড়ে পরিবেশে।”

শুধু যুদ্ধ ও দুর্ঘটনা নয়, গঙ্গা ও হলদিয়া বন্দরের সমস্যাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। ড্রেজিং না হওয়ার জন্য ডিভিসিকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, “আমি বারবার বলছি, তবুও কলকাতায় গঙ্গার ড্রেজিং হচ্ছে না। হলদিয়াতে পলি জমেছে। জাহাজ ঢুকতে পারছে না। ডিভিসি কিছুই করছে না। এই সব সমস্যার ফলে পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশ ও অর্থনীতি দুই-ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

Advertisements

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে পরিস্কার যে, তাঁর অভিযোগ কেবল প্রশাসনিক গাফিলতির বিরুদ্ধে নয়, বরং বড়সড় রাজনৈতিক বার্তাও বয়ে নিয়ে এল। যুদ্ধ ও দূষণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি একদিকে যেমন পরিবেশ সুরক্ষার বার্তা দেন, তেমনই কেন্দ্রের নীতিগত ব্যর্থতাকেও তুলে ধরেন।

তাঁর এই বক্তৃতা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের টানাপোড়েন ফের একবার সামনে এল বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে।

একাধিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য কেবল রাজ্য রাজনীতিতেই নয়, সার্বিকভাবে দেশের পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এখন দেখার, এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে কোনও পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসে কি না।